6.3 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ইংলিশ চ্যানেলে অবৈধ অভিবাসী শনাক্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে যুক্তরাজ্য

ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঠেকাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই)’র উপর আস্থা রাখতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য৷ এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিরক্ষা স্টার্টআপের সঙ্গে চুক্তিও করেছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। তবে এই পরিকল্পনার আইনি ও কারিগরি দিক নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান অ্যান্ডুরিলের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করেছে ব্রিটিশ হোম অফিস বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের ডোভার উপকূলে একটি নজরদারি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে৷ এই গ্রীষ্মে অন্যান্য প্রযুক্তি বসানোরও সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে অভিবাসী শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ঝুঁকি এবং ব্যবহারিক ত্রুটিগুলো নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷

 

 

 

 

ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও গবেষক অলিভিয়ার কান বলেন, “এটি অবৈধ অভিবাসন বিলের পরবর্তী ধাপ। যার লক্ষ্য হলো, সমুদ্রে তোলা ছবিগুলো পুনরুদ্ধার করা এবং অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যের ভূখণ্ডে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে সেটি এআই ব্যবহার করে প্রমাণ করা।”

নৌকা নিয়ে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঠেকাতে সম্প্রতি একটি আইন পাশ করেছে যুক্তরাজ্য সরকার৷ অনিয়মিতভাবে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের সরাসরি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় আবেদন দায়ের করা ঠেকাতে ও তৃতীয় কোনো দেশে স্থানান্তরের লক্ষ্যে এই বিলটি আনা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করা অভিবাসীদের শনাক্ত এবং নজরদারি করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সরবরাহ করা হয়েছিল৷

উল্লেখ্য যে, উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নিরীক্ষায় ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অ্যান্ডুরিলের সঙ্গে ৩৮ লাখ পাউন্ডের একটি চুক্তি সই করে।

 

 

 

 

চুক্তির পরই মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি লন্ডনে তাদের শাখা খোলে। লন্ডন কার্যালয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়, স্বয়ংক্রিয় সনাক্তকরণের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা উন্নত করতে বাণিজ্যিকর প্রযুক্তির সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বয় করা।

অলিভিয়ার কানের মতে, “ব্রেক্সিটের কারণে ইউকে সরকারকে এখন আর জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশন জমা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যেটি ডেটা সুরক্ষার একটি আইন। ইইউ এবং ইইএ অঞ্চলের বাইরে ব্যক্তিগত ডেটা স্থানান্তরে এই আইন মেনে চলা বাধ্যতামূলক।’’

তারপরেও যুক্তরাজ্যের নিজস্ব ডেটা সুরক্ষা আইন রয়েছে, যা সরকার চাইলে লঙ্ঘন করতে পারে না। অভ্যন্তরীণ ও বহিঃ ডেটাসহ সার্ভারগুলোর অবস্থান এবং ডেটা সার্ভার সংশ্লিষ্ট ব্রিটিশ নাগরিকদের আপিলের অধিকারগুলো কোন প্রক্রিয়ায় যাবে এসব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

পাশাপাশি, সমুদ্রে অভিবাসীদের শনাক্ত করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত অসুবিধার কথাও উল্লেখ করেছেন অলিভিয়ার৷ তার মতে, “চ্যানেলে প্রায় সময় বিরূপ আবহাওয়া থাকে৷ রাতের বেলায়ও ছোট নৌকায় অভিবাসীরা পারাপার করে। এমন পরিস্থিতিতে এআই-এর মুখাবয়ব শনাক্তের প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করবে?”

 

 

 

 

অপরদিকে, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে অভিবাসী এবং মানবপাচারকারীরা দ্রুত মানিয়ে নেয়ার নজির রয়েছে। এসব প্রযুক্তির কারণে এখন থেকে সংশ্লিষ্টরা মুখ ঢেকে চ্যানেল পাড়ি দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে উদ্বাস্তু সুরক্ষা‘ শিরোনামে চ্যাথাম হাউজের একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, “আশ্রয় ব্যবস্থা, ও অভিবাসন নীতিতে এইআই ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছু নৈতিক ও আইনি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অস্বচ্ছতা, সম্ভাব্য পক্ষপাতিত্ব এবং বেআইনি বৈষম্যের কারণে প্রাপ্ত ভুল বা অন্যায্য সিদ্ধান্ত ব্যক্তিদের প্রতিকার পাওয়ার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।”

কানের মতে, “ব্রিটিশ সরকার শুধু অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানকে ন্যায্যতা দিতে এবং শক্তিশালী করতে এআই ব্যবহার করবে।”

 

 

আরো পড়ুন

ব্রিটিশ পুলিশের ১০০ ধর্ষণের তথ্য প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক

আবারও আশ্রয়প্রার্থীদের বিবি স্টকহোমে ফেরাচ্ছে যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশের কাছে যুক্তরাজ্যের শেখার আছে: ব্লুমবার্গ

নিউজ ডেস্ক