ইংল্যান্ডের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহনকারী কোচে (coach) লুকিয়ে চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছে দুই অবৈধ অভিবাসী। ঘটনাটি ঘটে ফ্রান্সের বোলোন (Boulogne) থেকে লন্ডনে ফেরার সময়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের উদ্দেশ্যে দুই ব্যক্তি—যাদের মধ্যে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে ধারণা করা হচ্ছে—বাসটির লাগেজ রাখার খোপে (luggage compartment) উঠে পড়ে। বাসটিতে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক ছিলেন, যারা ফ্রান্সে একদিনের শিক্ষাসফর শেষে দেশে ফিরছিলেন।
বাসটি ডোভার (Dover) পেরিয়ে এম-১১ (M11) মহাসড়কের বারচেঞ্জার গ্রিন সার্ভিস স্টেশনে (Birchanger Green Welcome Break service station) পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা নিচের দিক থেকে শব্দ শুনতে পান। চালক সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ি থামিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
সেখানে থেকেই বেরিয়ে আসে দুই অভিবাসী। উপস্থিত শিক্ষকরা সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। বাসের ইঞ্জিনে সমস্যা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, যাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে না পড়ে।
পরবর্তীতে পুলিশ এসে একজনকে হেফাজতে (custody) নেয় এবং একজনকে স্যোশাল কেয়ারের (social care) আওতায় দেয়া হয়। পুলিশ জানায়, রাত ১০টার কিছু আগে ঘটনাটি ঘটে এবং তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের যাত্রা অন্তত এক ঘণ্টা বিলম্বিত হয়। অনেক অভিভাবক এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন অভিভাবক বলেন, “আমার সন্তান তখন খুব ক্লান্ত ছিল। সকাল ৩টায় উঠেছে, রাত ১০টায় বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু এই ঘটনার কারণে রাত ১১টার পর বাড়ি ফিরেছে। যারা লুকিয়ে ছিল, তারা যে কেউ হতে পারত – বিষয়টি ভেবে আতঙ্ক লাগে।”
হোম অফিস (Home Office) জানিয়েছে, কীভাবে তারা সীমান্ত কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিল সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এক মুখপাত্র বলেন, “মানবপাচারকারীদের (people-smuggling gangs) বিরুদ্ধে আমরা কঠোরভাবে কাজ করছি এবং কোচসহ সব গোপন পথ পর্যবেক্ষণে রাখছি। সীমান্ত নিরাপত্তায় প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে।”
এই ঘটনার আগেও একাধিক স্টোওঅ্যাওয়ে (stowaway) ঘটনায় নজর পড়েছে কর্তৃপক্ষের। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় বন্দরগুলিতে ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ৫,৮৭৪টি অবৈধ অনুপ্রবেশ সনাক্ত হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব স্টোওঅ্যাওয়ে অভিবাসীরা প্রায়ই সীমান্ত অতিক্রমের পর নজরে না এসে অবৈধ কাজ বা আশ্রয় আবেদন করে হোটেল সুবিধা গ্রহণ করছে। এ ধরনের প্রবণতা দেশের নিরাপত্তা ও অভিবাসন ব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
০৯ জুন ২০২৫