5.2 C
London
January 20, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে অপরাধীদের জন্য কোভিড-স্টাইল লকডাউন প্রস্তাব

যুক্তরাজ্যের বার কাউন্সিল অ-হিংস্র অপরাধীদের সমাজে পুনঃপ্রবেশে সহায়তা এবং অতিরিক্ত ভিড়ে ভুগতে থাকা কারাগারের চাপ কমানোর জন্য মহামারিকালীন নিষেধাজ্ঞা মতো প্রস্তাব করেছে।

কারাগারে অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে কোভিড লকডাউনের মতো শর্ত অপরাধীদের ওপর আরোপ করা যেতে পারে বলে ব্যারিস্টাররা সরকারের কাছে প্রস্তাব রেখেছেন।

সাবেক কনজারভেটিভ বিচারমন্ত্রী ডেভিড গকের নেতৃত্বাধীন চলমান সাজা পর্যালোচনায় একটি আনুষ্ঠানিক জমায়েতে বার কাউন্সিল “শাস্তির সৃজনশীল ব্যবহারের” আহ্বান জানিয়েছে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের ব্যারিস্টারদের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংস্থা অ-হিংস্র অপরাধীদের জন্য বর্ধিত হোম ডিটেনশন এবং “আংশিক সময়ের কারাগার” ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছে, যা বন্দিদের সমাজে পুনঃপ্রবেশে সহায়তা করবে।

পর্যালোচনায় জমা দেওয়া একটি নথিতে বলা হয়েছে, “কারাগারের বিকল্প হিসেবে ২০ ঘণ্টার কারফিউ আরোপ করা হলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। কোভিড-সংক্রান্ত লকডাউনের সময় যেসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, ঠিক সেইভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে প্রয়োগ করা যেতে পারে।”

বার কাউন্সিল বলেছে, অপরাধীদের পাব, খেলার মাঠ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়া নিষিদ্ধ করার জন্য আইন ইতোমধ্যেই রয়েছে, যা কারাগারে না পাঠিয়েও তাদের স্বাধীনতায় বড় ধরনের বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে।

তারা সুইডেনের উদাহরণ অনুসরণ করারও আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে বন্দিদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরিবার দেখার, শিক্ষাকোর্স সম্পন্ন করার এবং কাজ খোঁজার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়।

আংশিক সময়ের কারাগারের ধারণা নিয়ে বার কাউন্সিল বলেছে, কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং অ-হিংস্র অপরাধীদের জন্য “আংশিক সময়ের কারাগার” ডিজাইন করা যেতে পারে, যা তাদের কাজ করতে, প্রশিক্ষণ নিতে এবং পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

ডেভিড গকের এই সাজা নীতির পর্যালোচনার জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠী তাদের প্রস্তাব ও তথ্য জমা দিচ্ছে। এই পর্যালোচনা অক্টোবর মাসে শুরু হয় এবং চলতি বছরের শেষের দিকে এর ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কারাগারের সংকটের কারণে পূর্ববর্তী সরকারগুলো বন্দিদের আগাম মুক্তি এবং পুলিশ স্টেশনগুলোতে আটক রাখার মতো জরুরি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে।

ন্যাশনাল অডিট অফিসের একটি সমালোচনামূলক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে কারাগারের চাহিদা মেটাতে বর্তমান নির্মাণ পরিকল্পনা যথেষ্ট নয় এবং ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ প্রায় ১২,৪০০ জনের মতো কারাগারের জায়গার অভাব হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পূর্ববর্তী সরকারগুলোর অপরাধ নীতির সঙ্গে কারাগারের স্থান সংখ্যা সামঞ্জস্য করতে ব্যর্থ হওয়াই সংকটের প্রধান কারণ।

মিশেল হিলি কেসি, যিনি বার কাউন্সিলের প্রস্তাব তৈরি করা কার্যকরী দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি বলেন, “বর্তমান ব্যবস্থা কাজ করছে না। কারাগারের সংখ্যা বাড়লেও অপরাধের হার কমছে না বরং নতুন অপরাধের হার বেড়েছে।”

তিনি বলেন, “যারা বিপজ্জনক অপরাধী, তাদের জন্য কারাগার সবসময়ই থাকবে। তবে অপরাধে জড়িয়ে পড়া থেকে মানুষকে থামাতে শিক্ষার মাধ্যমে এবং থেরাপি দিয়ে আরও কাজ করা দরকার। শাস্তি ও পুনর্বাসনের মধ্যে ভারসাম্য আনাটাই মূখ্য বিষয়।”

ন্যায়বিচার মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “ স্বাধীন সাজা পর্যালোচনা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।। যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার বন্দিদের আগাম মুক্তি দিতে বাধ্য না হয়।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২০ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

এসাইলাম প্রার্থীদের ব্যাকলগ পরিষ্কার করতে চায় যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যে জুড়িবোর্ডে নৃগোষ্ঠীর প্রভাব হ্রাস নিয়ে গবেষণা প্রকাশ

‘যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা চালাচ্ছে রাশিয়া ও চীন’