যুক্তরাষ্ট্রে একজন ইউটিউবার ও সাবেক অলিম্পিক স্নোবোর্ডারকে ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার ভিডিও জনপ্রিয় করতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান বিধ্বস্ত করেছেন এবং তারপর মার্কিন তদন্তকারীদের কাছে এ সম্পর্কে মিথ্যা বলেছেন। বিবিসি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ বছর বয়সী ইউটিউবার ট্রেভর জ্যাকব ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ভিডিও পোস্ট করেছিলেন এবং দুর্ঘটনা বলে বুঝিয়েছিলেন।
সে সময় তিনি সেলফি স্টিক হাতে বিমান থেকে বের হয়ে যান এবং প্যারাশুটে করে অবতরণ করেন। ভিডিওটি লাখ লাখ বার দেখা হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, ২০২১ সালের নভেম্বরে জ্যাকব তার প্লেনে লাগানো ক্যামেরাসহ একা একটি ফ্লাইটে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারা বিমানবন্দর ছেড়ে যান। ক্যামেরার পাশাপাশি জ্যাকব তার সঙ্গে একটি প্যারাশুট ও একটি সেলফি স্টিক নিয়েছিলেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টের মার্কিন অ্যাটর্নি অফিস বলেছে, জ্যাকবের ‘গন্তব্যে পৌঁছানোর ইচ্ছা ছিল না; বরং উড্ডয়নের সময় তার বিমান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তিনি নিজে প্যারাশুটে করে মাটিতে নামেন এবং তার বিমানটি নেমে যাওয়ার সময় ও বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ভিডিও করেন।’
প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, বিমানটি উড্ডয়নের ৩৫ মিনিট পর লস প্যাড্রেস ন্যাশনাল ফরেস্টে বিধ্বস্ত হয়।
জ্যাকব ঘটনাস্থলে গিয়ে বিমানে লাগানো ক্যামেরা থেকে ফুটেজ উদ্ধার করেন। তারপর তিনি ২৩ ডিসেম্বর ইউটিউবে ‘আই ক্র্যাশড মাই এয়ারপ্লেন’ শিরোনামের ভিডিওটি আপলোড করেন, যেটিতে একটি ওয়ালেট কোম্পানির জন্য প্রচারণাও ছিল। কিছু দর্শক দুর্ঘটনার বিষয়ে সন্দিহান ছিলেন। জ্যাকব আগেই প্যারাশুট পরে ছিলেন এবং বিমানটিকে নিরাপদে অবতরণ করার কোনো চেষ্টাই করেননি। তিনি জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডকে দুর্ঘটনার কথা জানান।
কিন্তু জ্যাকব দাবি করেন, তিনি বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার অবস্থান জানেন না। একটি আবেদনে জ্যাকব দাবি করেছিলেন, তিনি একটি পণ্যের স্পনসরশিপ চুক্তির অংশ হিসেবে ভিডিওটি চিত্রায়িত করেছেন। পরে এ বছরের শুরুতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল প্রসিকিউটররা সোমবার বলেছেন, জ্যাকব সম্ভবত নিজের জন্য সামাজিক যোগাযোগ ও সংবাদমাধ্যমে জনপ্রিয়তা তৈরি করতে এবং আর্থিক লাভের জন্য এই অপরাধ করেছিলেন। তবু এ ধরনের ‘দুঃসাহসী’ আচরণ সহ্য করা যায় না।
উল্লেখ্য যে, ভিডিওটি সরানোর আগে প্রায় তিন মিলিয়ন ভিউ হয়েছিল।
এম.কে
০৬ ডিসেম্বর ২০২৩