4.3 C
London
January 22, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ইউনিভার্সিটি ও হোম অফিসের অযাচিত সিদ্ধান্তে একজন ছাত্রের করুণ পরিনতি

স্টুডেন্ট ভিসায় ইউকেতে আসা একজন শিক্ষার্থীকে ইউকে হতে ডিপোর্ট করা হতে পারে বলে জানিয়েছে হোম অফিস কর্তৃপক্ষ। ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ভুল এলরোলমেন্টের তারিখ দেওয়ায় তিনি দু’মাস আগে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিলেন বলে খবরে জানা যায়।

রাসিখ আজিজকে ইউনিভার্সিটি হতে জানানো হয়েছিল ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া কোর্সের জন্য অক্টোবর ২০২২ সালের মধ্যে অবশ্যই এনরোল হতে হবে। নথি অনুসারে দেখা যায় পরবর্তীকালে তিনি যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্মিংহাম ক্যাম্পাসে উপস্থাপন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্মিংহাম ক্যাম্পাসেই তার অন্তর্ভুক্তি ছিল এবং তাকে একটি স্টুডেন্ট কার্ডও জারি করা হয় ইউনিভার্সিটির পক্ষ হতে। জানুয়ারিতে, তিনি কোনও সমস্যা ছাড়াই ক্লাসে অংশ নেওয়া শুরু করেছিলেন।

তবে ঠিক পরবর্তী মাসে তিনি যখন অন্য একটি প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স টিমের সাথে যোগাযোগ করেন তখন তিনি ভিন্ন বার্তা পান। তাকে অতিরিক্ত আগে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের কারণে ডিপোর্টের বিষয়ে জানানো হয়।

রাসিখ আজিজকে ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হয় তাকে একজন ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসাবে গণ্য করা হবে না। এছাড়া কোর্স নিজের দেশ হতে অনলাইনে সম্পন্ন করার পরামর্শ ও দেয়া হয়। এছাড়া সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তাকে মাত্র একদিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরবর্তী ইমেইলের মাধ্যমে আরও বলা হয় যেহেতু তিনি কোর্স শুরুর বেশি আগে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন সেহেতু তাকে তারা স্টুডেন্ট ভিসা রুটে পরিগনিত করছে না।

 

 

 

 

 

 

এই ইমেইলের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি তাদের স্পনসরশিপ প্রত্যাহার করে নেয় এবং হোম অফিসে রিপোর্ট করে। আজিজকে হোম অফিস কর্তৃক জানানো হয়েছে যে তার নিজের ব্যয়ে ২২মে এর ভিতরে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে হবে নতুবা জোর পূর্বক ডিপোর্ট করা হবে।

রাসিখ তার অভিব্যক্তিতে বলেন, ” এটি আমার পক্ষ থেকে কোনও ভুল নয় এবং আমি টিউশন ফি হিসাবে অর্থ প্রদান করছি। আমি আমার ভবিষ্যতের বিষয়ে হতাশাগ্রস্ত, মর্মাহত এবং খুব চিন্তিত বোধ করছি। মনে হচ্ছে আমার সাথে যে আচরণ করা হচ্ছে তাতে আমার কোনো ভুল আছে কিন্তু আদৌ তাতে আমার কোনো ভুল নেই। ”

লাহোরের বাসিন্দা আজিজ একজন ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হয়েছেন। ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞের মতে ইউকে হোম অফিস অন্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রশাসনিক ত্রুটির জন্য রাসিখ আজিজকে দণ্ডিত করা হচ্ছে। তিনি যদি এখনই ফিরে আসেন তবে তিনি ভিসা ফি, ফ্লাইট এবং আবাসন ব্যয়ের জন্য কয়েক হাজার পাউন্ড নষ্ট করবেন তা আর ফেরত পাবেন না। তাছাড়া তার জীবন থেকে নষ্ট হবে এক বছর বা তারো বেশি সময় যা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলবে।

আজিজের নিয়োগকারী ইমিগ্রেশন উপদেষ্টা বলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ইস্যু সংক্রান্ত সমস্যাটি সংশোধন করার চেষ্টা না করে হোম অফিসে ছাত্রের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেছিল। এটা কখনও ভালো উদাহরণ হতে পারেনা।

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সৃষ্ট অ্যাডমিন ত্রুটি এই শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার, ভবিষ্যত এবং ব্যক্তিগত সুস্থতা ধ্বংস করবে যা অনভিপ্রেত।”

 

 

 

 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ আমরা উদ্ভুত বিষয়ে রাসিখ এবং তার আইনী দলের সাথে সক্রিয় আলোচনা করেছি। যেহেতু এটি বর্তমানে একটি চলমান অভিযোগ, আমরা যে কোনও শিক্ষার্থীর অভিযোগকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিই এবং আমরা সর্বদা আমাদের ক্ষমতার মধ্যে সমস্ত কিছু করতে সচেষ্ট।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, স্টুডেন্টের ডকুমেন্টেশন নিয়ে সমস্যা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় তার পড়াশোনা শুরু করার অনুমতি কেন দেয় তা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাখ্যা করেনি।

মাইগ্র‍্যান্ট রাইট নেটওয়ার্ক চ্যারেটির কর্মকর্তা ফিজা কুরেশি বলেছেন, এই মামলাটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তাদের বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা কিভাবে নিগ্রহের শিকার হয় তার একটি উপমামাত্র। একজন ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট কি কি কঠিন বিষয় অতিক্রম করে তাদের জীবন চালিয়ে নেওয়ার সাথে সাথে পড়াশোনা করতে হয় তা কখনও হোম অফিস কিংবা ইউনিভার্সিটি অনুধাবন করতে চায় না।

উল্লেখ্য যে গত নভেম্বরে মাসে আরো এক ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট সুলাভ খাদকারকে ভুলভাবে আটক করে বোর্ডার এজেন্সি এবং আটক করে রাখে।এতে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় অতিক্রান্ত হয়ে যায় বিধায় তাকে নেপাল ফেরত যেতে বাধ্য করা হয়। তাই হোম অফিস কর্তৃক এই আচরণ নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন অনেক ভুক্তভোগী।

 

আরো পড়ুন

কে হবেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?

অনলাইন ডেস্ক

কে হতে যাচ্ছেন কিং চার্লসের উত্তরাধিকারী

কোভিড টেস্টের ভুয়া মেসেজ নিয়ে সতর্ক করল এনএইচএস

অনলাইন ডেস্ক