ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। এ নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম বড় নির্বাচন ডেমোক্র্যাটরা ব্যাপকভাবে জয়লাভ করেছে।
৩৪ বছর বয়সী মামদানি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন—তিনি নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র এবং সবার তরুণতম নেতা, যিনি গত এক শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
মামদানির জয়কে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রগতিশীল শাখার বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “এই রাজনৈতিক অন্ধকারের মুহূর্তে নিউইয়র্ক আলোর শহর হবে।” তার বক্তব্যে তিনি সরাসরি ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে বলেন, “আমাদের কাউকে নামাতে চাইলে আপনাকে আমাদের সবার মধ্য দিয়েই যেতে হবে।”
ট্রাম্প, যিনি জানিয়েছিলেন মামদানি জয়ী হলে নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল কেটে দেওয়া হবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন: “এবং শুরু হল।”
মামদানির ইতিহাস গড়া জয়ের পরেও বাস্তব চ্যালেঞ্জ কম নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার সাফল্য এবং ব্যর্থতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
জোহরান মামদানি জন্মগ্রহণ করেছেন উগান্ডায়। সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে তিনি নিউইয়র্কে আসেন। কিশোর বয়সে তিনি উগান্ডার ডেইলি মনিটর পত্রিকায় ইন্টার্ন ছিলেন। তখন তিনি খেলাধুলায় বেশি আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু কৌতূহল এবং অধ্যবসায়ের কারণে রাজনীতিতে তিনি পথ খুঁজে পেয়েছেন।
মামদানি বুধবার নিউইয়র্কে উদযাপনরত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “এক মুহূর্ত আসে, যা ইতিহাসে বিরল—যখন আমরা পুরোনো থেকে নতুনের পথে পদক্ষেপ করি।” তিনি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ১৯৪৭ সালের মধ্যরাত্রির ভাষণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন।
বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর, ২০০৪ সালের বলিউড হিট ধুম সিনেমার মূল গান বাজানো হয়। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে মামদানি বলিউডকে নির্বাচনী প্রচারণার ভাষায় ব্যবহার করেছিলেন। হিন্দিতে রেকর্ড করা তার বার্তাগুলোতে জনপ্রিয় বলিউড চলচ্চিত্রের সংলাপ ও চিত্র ব্যবহার করে মানুষের মন জয় করেছেন।
অনেকে মনে করছেন, নেহরুর ভাষণের প্রতি তার ইঙ্গিত নিউইয়র্কে একটি নতুন, অজানা এবং সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি বহন করছে। জোহরান মামদানি এখন কেবল নিউইয়র্কের নয়, তরুণ প্রজন্মের কাছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে

