লন্ডনের ক্রয়ডন বরোতে অবৈধভাবে আবর্জনা ফেলা বা ফ্লাইটিপিং এতটাই ভয়াবহ আকার নিয়েছে যে স্থানীয় পার্কগুলো এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সোফা, ম্যাট্রেস, ভ্যাকুয়াম ক্লিনারসহ নানা ধরনের ফেলে দেওয়া জিনিসপত্রে ভরে গেছে রাস্তাঘাট ও খোলা জায়গা। স্থানীয়রা ক্রয়ডনকে এখন ‘লন্ডনের ডাস্টবিন’ বলে ডাকছেন।
চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই ক্রয়ডন কাউন্সিলে ৫৫ হাজারেরও বেশি ফ্লাইটিপিংয়ের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। শুধু গত এক বছরেই থরন্টন হিথ এলাকার ৬৮ বছর বয়সী গ্রাহাম মিচেল একাই ১৮ হাজার বার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তিনি প্রতিদিন গড়ে ৫৮টি ঘটনা নথিবদ্ধ করেন। একই এলাকার বাসিন্দা আনিমোট ওতুনুগা বলেন, “বাড়ির সামনে সবসময়ই আবর্জনার স্তূপ পড়ে থাকে। গন্ধে থাকা যায় না। সকালে জানালা খুললেই চোখে পড়ে ফেলে দেওয়া ম্যাট্রেস আর বর্জ্য। এটা একেবারেই সহনীয় নয়।”
গত বছর কাউন্সিল কেবল ফ্লাইটিপিং পরিষ্কার করতেই ব্যয় করেছে প্রায় ১০ লাখ পাউন্ড। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নতুন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকর্তা রাস্তায় নজরদারি করছেন, আবর্জনার ভেতর থেকে পরিচয় বের করে দায়ীদের শনাক্ত করছেন এবং ঘটনাস্থলেই জরিমানা করছেন। মেয়র জেসন পেরি বলেন, “শুধু পরিষ্কার করলেই হবে না, যারা এটা করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।”
তবে ক্রয়ডনের সমস্যা এখানেই সীমিত নয়। এ বরোতে লন্ডনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্টকিং, হয়রানি ও যৌন অপরাধ ঘটে। গত মার্চ থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত যৌন নিপীড়নের ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে ১,২০০টিরও বেশি, আর স্টকিং ও হয়রানির ঘটনা ২,৫০০।
এদিকে, আর্থিক সংকটেও জর্জরিত ক্রয়ডন কাউন্সিল। ২০২০ সালের পর থেকে তিনবার দেউলিয়া ঘোষণা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে তাদের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১.৬ বিলিয়ন পাউন্ডে। শুধু ঋণ শোধ করতেই এ বছর ব্যয় হবে ৭১ মিলিয়ন পাউন্ড, যা স্থানীয় পরিষেবা প্রদানে আরও বড় চাপ তৈরি করছে।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫