11.1 C
London
November 5, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ঋণ ও করের চাপে যুক্তরাজ্যে অর্ধলাখ ব্যবসায় ধস

যুক্তরাজ্যে ঋণের উচ্চ সুদহার ও করের চাপে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান। একটি শীর্ষস্থানীয় করপোরেট পুনর্গঠন বিষয়ক সংস্থা জানায়, সুদহার বৃদ্ধির পাশাপাশি ভোক্তা চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যবসা খাতে দ্বিগুণ চাপে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, করপোরেট ট্যাক্স ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ব্যবসায়িক ঋণকে প্রভাবিত করেছে।

করপোরেট পুনর্গঠন খাত বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বেগবিস ট্রাইনর সম্প্রতি এক সতর্ক বার্তায় জানিয়েছে, গত বছরের শেষ দিকে ৪৭ হাজার ৪৭৭টি প্রতিষ্ঠান গুরুতর আর্থিক সংকটে ছিল। শুধু সেপ্টেম্বর থেকে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১০ হাজার। ধারণা করা হচ্ছে, তালিকায় থাকা অনেক কোম্পানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে এবং তারা ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতাও হারাবে।

বেগবিস ট্রাইনরের অংশীদার জুলি পামার বলেন, ভোক্তাদের জীবনযাত্রা যে কঠিন সংকটের সম্মুখীন, তা কোম্পানিগুলোর ওপর প্রভাব ফেলেছে। সস্তা ঋণের দিন শেষ হয়ে গেছে। ভোক্তাদের আস্থা খুবই কমে গেছে এবং ঋণ পরিশোধের জন্য তাদের আরো বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। এটি একটি কঠিন বছর হতে যাচ্ছে। সবাই দ্বিগুণ চাপের মধ্যে রয়েছে।

জুলি পামার জানান, যে সংস্থাগুলো টিকে থাকার জন্য কভিডের সময় ধার নিয়েছিল তাদেরও বাউন্সব্যাক ঋণ পরিশোধ করতে হবে, যা আর্থিক দুরবস্থাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদহার ৫ দশমিক ২৫ ধার্য করায় ঋণ নেয়ার খরচ বেড়েছে। অথচ যখন ঋণ নেয়া হয়েছিল, তা ছিল একেবারে কম। ২০২১ সালের দশমিক ১ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।

মাল্টিন্যাশনাল ল ফার্ম আশুর্স্টের আইনজীবী ইঙ্গা ওয়েস্ট জানান, এটি আশ্চর্যজনক নয় যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো চাপ অনুভব করছে। ছোট ব্যবসার জন্য এ চাপের অর্থ হলো খাদের কিনারায় দাঁড়ানো।

তিনি আরো জানান, বড় ব্যবসার জন্য প্রায়ই আরো কয়েকটি বিকল্প খোলা থাকে। কিন্তু সুদের হার বেশি হলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার পথ কঠিন হয়ে যায়। এ সময় তাদের পরিচালন ব্যয় ও আর্থিক পুনর্গঠন উভয় ক্ষেত্রেই সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে।

যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর ১৭-২৫ হাজার কোম্পানি আর্থিক অনটনে পড়ে। এখন বেগবিসের তালিকায় ‘গুরুতর’ অবস্থায় থাকা কোম্পানিগুলো একই পরিস্থিতিতে পড়া মানে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। ‘গুরুতর’ হিসেবে আখ্যায়িত সংস্থাগুলো ছাড়াও বেগবিসের মতে, যুক্তরাজ্যের ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ ব্যবসা এখন ‘উল্লেখযোগ্য’ আর্থিক সংকটে রয়েছে, যা গত প্রান্তিকের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি।

বেগবিস ট্রাইনরের অংশীদার জুলি পামার জানান, সুদহারের চাপ কিছু কমলেও পরিবেশ সহজ হওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা ঋণ নিয়েছে, তার কোনো স্পষ্ট পরিসংখ্যান নেই। তবে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড জানিয়েছে, ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঋণের মার্কেটে নিম্ন সুদহারের পরিবেশ গড়ে উঠেছে।

ওই প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি নীতির কারণেও প্রতিষ্ঠানগুলো হিমশিম খাচ্ছে। চ্যান্সেলর জেরেমি হান্ট এপ্রিল থেকে ন্যূনতম মজুরি প্রতি ঘণ্টায় ১ পাউন্ড বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৪৪ পাউন্ড করার পরিকল্পনা জানিয়েছে এবং করপোরেশন ট্যাক্স ১৯ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ কারণে খুচরা বিক্রেতাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছে বলে কারিসের মতো কোম্পানিগুলো অভিযোগ করেছে।

সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ

এম.কে
২৯ জানুয়ারি ২০২৪

আরো পড়ুন

আইসিইউতে থাকা ৯০% রোগীই ‘আনবুস্টেড’: বরিস জনসন

অনলাইন ডেস্ক

লন্ডনে বিক্রি হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের বাড়ি

অনলাইন ডেস্ক

অভিবাসন নিয়ে কনজারভেটিভ সরকারের উপর দলীয় সাংসদদের চাপ