দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভিসা উদারীকরণ প্রকল্পের ফলে এবার কসোভোর নাগরিকেরা ভিসা ছাড়াই ইউরোপের ‘বর্ডারলেস জোন’ অর্থাৎ সীমান্তহীন এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন। সোমবার এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে৷
রোববার মধ্যরাতে কার্যকর হওয়া নতুন নিয়মের ফলে কসোভোর নাগরিকেরা ৯০ থেকে ১৮০ দিন সময়সীমার মধ্যে ভিসা ছাড়াই সেনজেন এলাকায় যেতে পারবেন।
১৮ লাখ জনসংখ্যার দেশ কসোভো দীর্ঘদিন এই নিয়ম কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় ছিল।
পশ্চিম বলকানের দেশগুলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের উপযুক্ত করে তুলতে ব্রাসেলসও নিজস্ব উদ্যোগ নিচ্ছে৷ তাই নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়াকে পূর্ণ স্বীকৃতির দিকে আরেকটা পদক্ষেপ হিসাবে দেখছে প্রিস্টিনা।
ইইউ-তে যোগদানের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক উত্তেজনা এই দেশগুলোর পথে অন্যতম অন্তরায় হয়ে উঠেছিল৷ বিশেষ করে সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে সংকট নিয়ে চিন্তায় রয়েছে ইইউ৷ বৃহত্তর স্বার্থে যে কোনো রকমের মনোমালিন্য ও সংঘাত মিটিয়ে নেয়া একমাত্র পথ হওয়া উচিত বলে ইইউ মনে করছে৷
কসোভো ইউরোপের বলকান অঞ্চলের একটি দেশ, যা আগে সার্বিয়ার অধীনে থাকা একটি প্রদেশ হিসাবে পরিচিত ছিল। ১৯৯৯ সাল থেকে প্রদেশটি রাষ্ট্রসংঘের তত্ত্বাবধানে ছিল। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কসোভো স্বাধীনতা ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ শতাধিক দেশ ইতিমধ্যে কসোভোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী শাখা ইউরোপীয় কমিশনের মতে ২০১৮ সালের মধ্যে কসোভো সীমান্ত এবং অভিবাসন ব্যবস্থাপনাসহ ভিসামুক্ত ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত মানদণ্ড পূরণ করেছে। তবে ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডস এতে প্রথমে সম্মত ছিল না। এর কারণ হলো অভিবাসন প্রবাহের সম্ভাবনা। এ ছাড়াও সাইপ্রাস, গ্রিস, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া এবং স্পেন স্বাধীন কসোভোকে স্বীকৃতি দেয়নি।
ইইউ কসোভোর সঙ্গে ভিসা ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার আগে, কসোভোর পাসপোর্টধারীরা সারা বিশ্বের শুধুমাত্র ১৪টি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারত।
গত কয়েক মাস প্রিস্টিনার সরকার জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে ইইউতে চাকরি খোঁজার মাধ্যমে যাতে কেউ এই ভিসা সংক্রান্ত সুবিধার অপব্যবহার না করে।
প্রধানমন্ত্রী আলবিন কুর্তি নিজেই প্রচারণার নেতৃত্ব দিয়েছেন। যারা ভিসা ছাড়াই প্রিস্টিনা বিমানবন্দর থেকে প্রথমবার ইইউর দেশগুলোতে ভ্রমণ করবেন। সোমবার তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন কুর্তি।
এম.কে
০২ জানুয়ারি ২০২৩