6.4 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

কিয়ার স্টারমার, শূন্য থেকে উঠে আসা এক তারকা

কিয়ার স্টারমারের বর্তমান বয়স ৬১ বছর। তিনি লন্ডনের উপকণ্ঠে অবস্থিত সারে শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে কাজ করেছেন। আর বাবা পেশায় ছিলেন টুলমেকার বা যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক। তার মা আজীবন বাতের অসুস্থতায় ভুগেছেন। বাবার সঙ্গে মা কিংবা কিয়ার স্টারমার কারো সম্পর্ক ভালো ছিল না।

এক অর্থে বলা যায়, কিয়ার স্টারমার একপ্রকার শূন্য থেকেই উঠে আসা। তিনিই তার পরিবারের প্রথম ব্যক্তি যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে পা রেখেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কিয়ার স্টারমার বাম ঘরানার একটি ম্যাগাজিন সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ব্রিটেনের লিডস ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরুর আগে তিনি রিগেট গ্রামার স্কুলে এবং পরে অক্সফোর্ডের সেন্ট এডমন্ড হলে পড়াশোনা করেন।

পরে তিনি একজন ব্যারিস্টার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। দ্রুতই তিনি নিজেকে মানবাধিকার সংক্রান্ত আইনের ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আইন বিষয়ে তার প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠা তাকে ২০০৮ সালে ব্রিটেনের পাবলিক প্রসিকিউশন বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। এই পদে তিনি ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর পরের বছর ব্রিটিশ রাজ পরিবারের তরফ থেকে তাকে নাইটহুড তথা স্যার উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এরপরই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন।

কিয়ার স্টারমার পরে ২০১৫ সালে লেবার পার্টি থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। তার নির্বাচন জয়ের কয়েক সপ্তাহের মাথায় মা মারা যান। তার বাবাও মারা যান বছর তিনেক পর। কিয়ার স্টারমার বাবার মৃত্যুর পর একাধিকবার আক্ষেপ করেছেন যে, তিনি তার বাবাকে একবারও বলতে পারেননি যে, তিনি তাকে ভালোবাসেন।

২০১৫ সালের পর রাজনীতিতে কিয়ার স্টারমারকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৯ সালে লেবার পার্টির নির্বাচনে ভরাডুবির পর তাকে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়। যদিও অনেকেই সমালোচনা করে বলেন, কিয়ার স্টারমারের মাঝে কোনো রাজনৈতিক ক্যারিশমা নেই। তারপরও তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি লেবার পার্টিকে খাদের কিনার থেকে টেনে তুলে ক্ষমতার মসনদে বসিয়েছেন।

আইন বিষয়ে দারুণ প্রাজ্ঞ হওয়ার পরও কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি খুবই বিরক্তিকর একজন রাজনীতিবিদ। তার কোনো ক্যারিশমা নেই। কিন্তু এসব সমালোচনা তার রাজনৈতিক জীবনে খুব এক প্রভাব ফেলেনি। বরং তিনি আরও বেশি করে সেদিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

এ বিষয়ে একবার ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম আইটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিয়ার স্টারমার বলেছিলেন, ‘ কেউ যদি আপনাকে বলে যে—আপনি বিরক্তি কর, তাহলে এটি মাথা রাখবেন যে, আপনিই আসলে জিততে যাচ্ছেন।

কিয়ার স্টারমার হয়তো তার জায়গায় অটল ছিলেন বলেই সামান্য যন্ত্র প্রস্তুতকারীর ছেলে থেকে নাইটহুড উপাধি হাসিল করে আজ ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছেন। হয়তো তার বিরক্তিকর রাজনৈতিক চরিত্রই তাকে জিততে সহায়তা করেছে; যেমনটা তিনি দাবি করেছিলেন।

তথ্যসূত্রঃ সিবিএস নিউজ

এম.কে
০৬ জুলাই ২০২৪

আরো পড়ুন

লকডাউনে বরিস জনসনের আরেকটি গোপন পার্টির খবর ফাঁস!

অনলাইন ডেস্ক

কনজারভেটিভ পার্টি পুনরায় ফিরে আসার জন্য লড়াই করতে হবেঃ কেটি বলস

প্যানডেমিক যুগের সবচেয়ে কঠোর লকডাউন যুক্তরাজ্যে!

অনলাইন ডেস্ক