কুকুরের মাংস খাওয়া ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টে একটি আইনও পাশ করা হয়েছে। নতুন এই আইনের ফলে, দেশটিতে কুকুরের মাংস খাওয়া ও বিক্রির শত বছরেরও বেশি পুরোনো যে প্রথা ছিল তা বন্ধ হয়ে যাবে আনুষ্ঠানিকভাবে। মূলত দেশটিতে প্রাণীদের কল্যাণের বিষয়টি নিয়ে ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের মুখে দেশটির সরকার এই আইন পাশ করেছে।
কোরিয়ায় তীব্র শুষ্ক গ্রীষ্মের সময় কুকুরের মাংস খাওয়াকে শরীরের শক্তি বাড়ানোর অন্যতম উপায় বলে বিবেচনা করা হতো। তবে সেই বিষয়টি এখন আর নেই। তার বদলে কোরীয় সমাজে নিয়মিত কুকুরের মাংস খাওয়ার প্রচলন হয়েছে। কমবেশি প্রায় সব প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিই কুকুরের মাংস খেয়ে থাকেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরকে গৃহপালিত প্রাণী হিসেবেও বিবেচনা করার হার বাড়ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কুকুরকে জবাই করার বিষয়টিও নেতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, সাধারণত কুকুরের মাংস নেওয়ার ক্ষেত্রে কুকুরকে আগে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অথবা ফাঁসিতে লটকে হত্যা করা হয়। তবে কুকুরের মাংসের ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা আরও কম কষ্টদায়ক উপায়ে কুকুরকে হত্যা করেন।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল নিজেও এক প্রাণীপ্রেমী হওয়ায় এই আইন পাশ অনেকটাই সহজ হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ও তার কিম কিউন হীর ৬টি পোষা কুকুর ও ৮টি পোষা বিড়াল রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নিজেই কুকুরের মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে সরব।
দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টি দেশটির পার্লামেন্টে এই বিলটি উত্থাপন করে। ২১০ আসন বিশিষ্ট পার্লামেন্টে বিলটি ২০৮ ভোট পেয়ে একপ্রকার নজিরবিহীনভাবে পাশ হয়ে যায়। দুজন আইনপ্রণেতা ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। পরে পার্লামেন্টের কৃষি বিষয়ক কমিটি আইনটি অনুমোদন দেয়। পরে আজ মঙ্গলবার থেকে এই আইনটি কার্যকর হয়।
বিলটি আইনে পরিণত হলেও এখনই তা কার্যকর হবে না। আগামী তিন বছর এই আইন শিথিলভাবে প্রয়োগ করা হবে। এই সময়ের পর কেউ যদি কুকুরকে জবাই বা হত্যা করে মাংস খায় বা বিক্রয় করে তবে তার ৩ বছরের কারাদণ্ড অথবা ২২ হাজার ৮০০ ডলার জরিমানা করা হবে।
এম.কে
০৯ জানুয়ারি ২০২৪