যে মার্কিন দম্পতি ছোট একটি দোকান চালিয়ে সংসার চালাতেন সেই দম্পতিই একসময় ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার মূল্যের লটারি জিতে নেন। বর্তমানে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৮৪ কোটি টাকার সমান।
লটারি জয় ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু ওই দম্পতি ভাগ্য নয়, বরং লটারি জিততে তারা তাদের গাণিতিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েছিলেন।
মার্জ সেলবি ও জেরি দম্পতি। বর্তমানে তাদের বয়স যথাক্রমে ৮১ ও ৮০ বছর। এখন থেকে দুই দশক আগে লটারি জিতেছিলেন তারা। বিশাল অঙ্কের লটারি জেতার পরই বলতে গেলে রাতারাতি তাদের জীবন বদলে যায়।
মিশিগান রাজ্যের ওসিওলা কাউন্টির এভার্ট এলাকায় একটি দোকান চালিয়ে সংসার চলত এই দম্পতির। তখন তাদের বয়স ৬০-এর কোটায়। লটারি জয়ের পরপরই তারা অবসর নেন।
কিভাবে লটারি জয় নিশ্চিত করেছিলেন সম্প্রতি সেটাই নিউইয়র্ক পোস্টকে জানিয়েছেন এই দম্পতি। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন মতে, ২০০৩ সালে সেলবি ও জেরি দম্পতি উইনফল নামে একটি নতুন লটারি গেমের জন্য একটি ব্রোশার হাতে পান।
ব্রোশারটি হাতে পাওয়ার পর দ্রুতই তাতে একটি গাণিতিক ত্রুটি খুঁজে বের করেন তারা। মূলত ওই ত্রুটিই তাদের লটারি জয়ের সম্ভাবনার পথ দেখায়।
উইনফল লটারির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য ছিল যে যদি জ্যাকপটটি ৫ মিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছে এবং তা থামে, তাহলে লটারির অর্থ কম বিজয়ী সংখ্যার টিকিটধারীদের কাছে চলে যাবে।
বিষয়টি দেখেই সেলবি অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যান যে, যদি তিনি পর্যাপ্ত টিকিট কেনেন, তাহলে ওই গাণিতিক ত্রুটিই তার লটারি জয় নিশ্চিত করবে।
এই দম্পতি প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে লটারি ৩ হাজার ৬০০ ডলার বিনিয়োগ করেন। তাদের কষা হিসাব-নিকাশ ফলে যায়। প্রথমে প্রায় ৬ হাজার ৩০০ ডলার জেতেন তারা। এরপর তারা ৮ হাজার ডলার বাজি ধরেন এবং এবার বাজির দ্বিগুণ অর্থ জেতেন। এভাবে যতই খেলেন, ততই জেতেন।
এরপর এই লটারি খেলা তাদের নেশা হয়ে দাঁড়ায়। এবং তারা এই লটারি খেলায় এতটাই দক্ষ হয়ে ওঠেন যে, লটারি খেলার জন্য জিএস ইনভেস্টমেন্ট স্ট্রাটেজিস নামে একটা কর্পোরেশন বা কোম্পানি গড়ে তোলেন এবং তাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও বন্ধু-বান্ধবেরও অন্তর্ভূক্ত করেন।
সেলবি দম্পতি মিশিগান থেকে প্রায় ৭০০ মাইল দূরে ম্যাসাচুসেটসে অনুরূপ একটি উইনফল লটারি সম্পর্কে জানতে পারেন। জানার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুঁটে যান। এরপর ম্যাসাচুসেটসে যতবার লটারি খেলা হয়েছে ততবারই তারা সেখানে গিয়ে শত শত লটারি কিনেছেন।
সেলবি দম্পতি জানান, এভাবে তারা প্রায় নয় বছর ধরে উইনফল লটারি খেলেছেন। এই খেলায় তাদের কোম্পানি মোট ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার জিতেছে। এসব অর্থ নিজেদের বাড়ি সংস্কার এবং ছয় সন্তান, ২৪ জন নাতি-নাতনির স্কুলে পড়াশোনা করাতে ব্যবহার করা হয় বলে জানান এই দম্পতি।
এম.কে
০৯ জানুয়ারি ২০২৪