ফিলিস্তিনের গাজার পানি সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর হামলা চালিয়ে সেখানকার মানুষকে পানি থেকে বঞ্চিত করছে ইসরায়েল, যা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল ও রয়টার্সসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মানবাধিকার সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ মাসে ফিলিস্তিনি উপত্যকার পানি সরবরাহ কাঠামোয় ইসরায়েল যত হামলা চালিয়েছে, সেগুলো নিয়ে তদন্ত করেছে তারা। এতে দেখা গেছে, গাজাবাসী যেন সুপেয় পানি না পায়, সে জন্য ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃত হামলা চালিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে দূষিত জায়গা থেকে পানি সংগ্রহ করে পান করেছেন। যার ফলে সেখানে পানিবাহিত রোগের মহামারি সৃষ্টি হয়ে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা গণহত্যা। এই মহামারিতে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাজার সুপেয় পানির অবকাঠামোয় হামলার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলবিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক বিল ভন এসভল্ড জানান, তারা ১১৫ জনের জবানবন্দি নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। যার মধ্যে আছে সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক এবং সেবাকর্মী। এ ছাড়া প্রতিবেদন তৈরিতে স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে স্পষ্টভাবে সুপেয় পানির অবকাঠামোয় হামলার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি বসতিতে হামলা চালায়। এর পর শুরু হয় যুদ্ধ, যা ১৪ মাস ধরে চলছে। যুদ্ধের শুরুতে তৎকালীন ইসরায়েলি মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে গাজায় পানি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ইসরায়েলি মন্ত্রীদের বক্তব্য গণহত্যা সংঘটিত করার ইচ্ছার সুস্পষ্ট প্রমাণ। গাজাবাসীকে পানি থেকে বঞ্চিত করায় ইসরায়েলের ওপর নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
সূত্রঃ আল জাজিরা / টাইমস অব ইসরায়েল / রয়টার্স
এম.কে
২০ ডিসেম্বর ২০২৪