-1.5 C
London
January 10, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিহত

চট্টগ্রামে আদালতে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর তার অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত ৬-৭ জন চমেক হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।’

চমেক হাসপাতাল, পুলিশ ও আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, নিহত আইনজীবী হলেন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। তিনি চট্টগ্রামে লোহাগাড়া উপজেলার জালাল উদ্দিনের ছেলে। তার শরীরে কোপানোর জখম রয়েছে।

চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, ‘নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে কর্মরত ছিল।’

গত সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হয়।

আদালতে শুনানি শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় প্রিজনভ্যানে ওঠানো হয়। তবে তার অনুসারীদের বাধার কারণে প্রিজনভ্যানটি আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হতে পারেনি। প্রায় তিন ঘণ্টা প্রিজনভ্যান আটকে রাখার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এ সময় আদালত এলাকার মসজিদসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার পর ওই এলাকার পরিস্থিতি থমথমে হয়ে ওঠে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে বিক্ষোভকারীরা একটি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুর চালায়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। আহতদের সংখ্যা এখনই বলা যাচ্ছে না।’ পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত আছে বলে জানান ওসি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ১২টা থেকেই কয়েকশ নারী-পুরুষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহনকারী প্রিজনভ্যান আটকে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা তারা প্রিজনভ্যান আটকে রাখার পর বেলা ৩টার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে যায়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে এবং লাঠিচার্জ করে।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একপর্যায়ে আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় আইনজীবীদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চিন্ময়কে চট্টগ্রাম কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঘটনায় আহত এনামুল হক নামে এক সেবাপ্রার্থী অভিযোগ করেন, তিনি জমি রেজিস্ট্রির জন্য আদালতে এসেছিলেন। তার দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবি দেখায় ইসকনের কর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একটি সূত্র জানিয়েছে, আজ বেলা ১১টার দিকে চিন্ময় দাসকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালতজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর কড়া নিরাপত্তা ছিল। আদালতে তোলার পর চিন্ময়ের পক্ষে ৫১ জন আইনজীবী ছিলেন।

এম.কে
২৬ নভেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

সেনাবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাকে স্বাগত জানালেন আজহারী

বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করতে রাজি আওয়ামী লীগঃ হাছান মাহমুদ

বিষয়ভিত্তিক বিশ্বসেরা ৬০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের চারটি