যুক্তরাজ্যের স্কুল, কেয়ার হোম ও অফিসগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের চরম প্রভাব—বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি গরম ও বন্যার জন্য প্রস্তুত নয় বলে সতর্ক করেছে গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের এক যুগান্তকারী রিপোর্ট। এতে জলবায়ু সহনশীলতাকে জাতীয় জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২ ডিগ্রি উষ্ণায়নের মধ্যেই লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের স্কুলগুলো বছরে ১০ সপ্তাহ তীব্র গরমের (২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) মুখোমুখি হবে। একইসঙ্গে ওই অঞ্চলের ৬ মিলিয়ন বাড়ি ও ফ্ল্যাট তিন সপ্তাহ অতিরিক্ত গরমের শিকার হবে, যা কর্মদক্ষতা কমাবে এবং বয়স্কদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবে।
কেয়ার হোমগুলো বছরে চার সপ্তাহ ২৮ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা সহ্য করবে। অফিস ভবনগুলোর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা—বিশেষ করে আধুনিক ভবনগুলো বেশি কাচ ও হালকা কাঠামোর কারণে বেশি গরমের ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্যাসিভ অ্যাডাপ্টেশন’ যেমন সৌর ছায়া, সোলার গ্লাস, সবুজায়ন ইত্যাদিকে প্রাধান্য দিতে হবে, যাতে ভবনগুলোকে এয়ার কন্ডিশনিংয়ের উপর নির্ভর না করতে হয়। কারণ সেটি আরও বেশি শক্তি খরচ ও কার্বন নিঃসরণ ঘটায়।
রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে, চলমান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শতকের শেষে ইংল্যান্ডের পিটারবোরো এবং ওয়েলসের ফেয়ারবর্ন শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। বিশেষ করে বন্যা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে এই অবস্থা হবে।
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দাবানল, খরা ও বন্যার ঝুঁকিতে শীর্ষে রয়েছে লন্ডন, এরপর বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টার।
প্রতিবেদনটি পাঁচটি জলবায়ু হুমকি তুলে ধরেছে—অতিরিক্ত গরম, বন্যা, খরা, ঝড় ও দাবানল। এ থেকে রক্ষা পেতে সরকারের কাছে সুপারিশ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: মন্ত্রিসভায় ‘রেজিলিয়েন্স মন্ত্রী’ নিয়োগ, ভবন পরিকল্পনায় জলবায়ু নিরাপত্তা বাধ্যতামূলক করা, ভবিষ্যৎ হাউজিং নীতিতে অতিরিক্ত গরম ও বন্যার ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া, এবং সব কমিউনিটিতে গাছ-পার্ক-পুকুর সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা।
গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী সায়মন ম্যাকহুইটার বলেছেন, “যুক্তরাজ্য এখনকার চরম আবহাওয়ার জন্যই প্রস্তুত নয়, ভবিষ্যতের আরও ভয়াবহ জলবায়ুর জন্য তো নয়ই। এখনই আমাদের ভবন ও নগর ব্যবস্থাপনায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২৬ জুন ২০২৫