হুয়াইশেং নামের মসজিদটি চীনের গুয়াংচু শহরে অবস্থিত। নৌকাসমূহের দিক নিদের্শনায় সাহায্য করত বলে এটিকে “বাতিঘর মসজিদ”-ও ডাকা হয়। ১৩৯০ বছরের পুরনো এই মসজিদটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদগুলির একটি।
পুরাতন পাণ্ডুলিপি অনুসারে নবী হজরত মুহাম্মদ (সা) এর চাচা সাদ ইবন আবি ওয়াক্কাস (রা) ৬৫০ সালে এক মুসলিম মিশনের অংশ হিসেবে চীনে আসেন। তিনিই প্রথম চীনে অনুমতি নিয়ে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। তখন ছিল খোলাফায়ে রাশেদীনের শাসনকাল।
হুয়াইশেং নামের মসজিদটি গুয়াংজো শহরের প্রধান মসজিদ। হুয়াইশেং শব্দটির অর্থ হলো “জ্ঞানী লোককে স্মরণ”। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা) এর স্মরণে এ মসজিদটির নামকরণ করা হয় “হুয়াইশেং” মসজিদ। হুয়াইশেং মসজিদটি চীনের চারটি সুপরিচিত মসজিদের একটি। অন্য তিনটি মসজিদ হলো- ইয়াংঝৌ ক্র্যান মসজিদ, কুয়ানঝৌ কিলিন মসজিদ ও হ্যাংঝৌ ফিনিক্স মসজিদ।
মসজিদটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হলো ১১৮ ফুট উচ্চতার সরু মিনার। যেটিকে মসজিদের আলোক বুরুজও বলা হয়। এটি এমন একটি স্থাপনা, যা দেখতে সিলিন্ডারের আকৃতির। এতে পাথর ও চুন-সুরকির সুনিপুণ কাজ রয়েছে। বুরুজের ভেতরে রয়েছে সিঁড়িপথ। এ রকম স্থাপত্যশৈলীর মিনার চীনে আর কোথাও নেই। এই আলোক বুরুজের কারণেই মসজিদটির অপর নাম “লাইট হাউজ বা বাতিঘর মসজিদ”। এক সময় এ আলোক বুরুজটিকে ঝুজিয়াং নদীতে চলাচলকারী নৌকার জন্য আলোকস্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার হতো। হুয়াইশেং মসজিদ এখনো চালু আছে এবং গুয়াংঝৌর মুসলমান জনজীবনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
চীনে বর্তমানে ৩০ হাজারের বেশি মসজিদ রয়েছে। হুয়াইশেং মসজিদটি ১৩৫০ সালে সংস্কার ও পূণ:নির্মাণ করা হয়। ১৬৯৫ সালে এক অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হয়ে গেলে এটিকে আবারও নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকে মসজিদটি সেইভাবেই আছে।
এম.কে
১০ জানুয়ারি ২০২৪