15.6 C
London
October 5, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ছাত্রলীগের সবাই শিবিরকে ভোট দিয়েছেঃ ড. আসাদুজ্জামান রিপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা তুঙ্গে। প্রকাশিত ফলাফলে শিবির প্রর্থীরা জয় লাভ করেছে ভিপি, জিএস, এজিএস গুরুত্বপূর্ণ প্রধান ৩টি পদে। বিষয়টি নিয়েই এখন আলোচনা হচ্ছে সর্বমহলে, মূলত তাদের জয় ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে শিবিরের লীগ লীগ খেলার বিষয়টি।
একটি টেলিভিশন টকশোতে এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড.আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘ ছাত্রলীগের সবাই শিবিরকে ভোট দিয়েছে’। এর পিছনে তিনি যুক্ত দ্বার করিয়েছেন এক সময় শিবিরের প্রার্থীরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন, সেই হিসেবে বর্তমানে গুপ্ত ছাত্রলীগের সমর্থকদের সাথেও তাদের সম্পর্ক ভালো।
ইসলামকে সামনে নিয়ে রাজনীতি করা জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনটির গুপ্ত রাজনীতির কথাতো সকলেরই জানা কিন্তু ছাত্রলীগের রাজনীতিতে এক সময় থাকার ফলে আজ তাদের ভোটেই নির্বাচিত শিবির প্রার্থীরা এমনটিই মনে করছেন অনেকে। এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতি করার কারণে, সেই সখ্যতা থেকেও যদি শিবির প্রার্থীদের ভোট না দিয়ে থাকেন গুপ্তভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে থাকা ছাত্রলীগের সমর্থকরা। তাহলে হয়তো বাজারে যে তথ্য ছড়িয়েছে সেটিই সঠিক হলেও হতে পারে।
কেউ কেউ বলছেন ডাকসু নির্বাচনে ভোট কিনতে ১৫ কোটি থেকে ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেছে জামায়াতে ইসলামী। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে বিএনপি এক্ষেত্রে জামায়াতের কাছে রাজনৈতিক কৌশলে হেরে গেছে বলাই যায়। গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই যেখানে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবির ডাকসু নির্বাচনকে টার্গেট করেছে। তারা সেভাবেই ধাপে ধাপে এগিয়েছে। সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদদের মতো তরুণদের শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে। সেখানে বিএনপি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেত্বত্বে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাখো সমালোচনার পরও কিছু অছাত্র ও ডাকসু নির্বাচনে অযোগ্যদের রেখেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের কাছে বিএনপির কৌশলের বড় পরাজয় এই ডাকসু ইলেকশনে হেরে যাওয়া। কারণ, তারা চাইলেই খুব সুন্দর করে গুছিয়ে গত এক বছরে ছাত্রদলের নেতৃত্বে তরুণদের সুযোগ দিতে পারতো, তা না করে তাদের মাথায় সবসময় ঘুড়তো জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু, জামায়াত কৌশলে প্রথমেই টার্গেট করেছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। আর সেভাবে এগিয়েই তারা আজ সফল।
এদিকে ছাত্রদলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। তাদের নামে এখন পর্যন্ত নেই কোন দুর্নীতির অভিযোগও। এরপরও অছাত্রদের ছাত্রদলে রাখা কোনভাবেই কাম্য নয় বিএনপির মতো একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলের জন্য। তাদেরকে চাইলেই যুুবদলে বড় কোন পদ দিয়ে সরিয়ে নিতে পারতো আরও আগেই। আর আবিদুল ইসলাম আবিদকে আরও অনেক আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল সভাপতির পদে নিয়ে আসা উচিৎ ছিলো বিএনপির।
সোশ্যাল মিডিয়ায় লাখ লাখ সমালোচনা কমেন্টস প্রতিনিয়ত হতো এসব অছাত্রদের নিয়ে। নানা সময় প্রশ্নও উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এরপরও বিষয়টিকে কখনোই আমলে নেয়নি বিএনপি।
যেখানে শিবির গত এক বছর ধরে সাদিক কায়েম ও এসএম ফরহাদকে ঘিরেই চুপি চুপি প্রচারণা চালিয়েছে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে। সেখানে বিএনপির রাজনৈতিক চরম অদক্ষতায় কে প্রার্থী হবেন তাও জানা যাচ্ছিলো না শেষ মুহূর্তে এসেও। আর বেশি বয়স্কদের এখনো ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় বড় বড় পদে রাখায় সংগঠনটির মধ্যেও বেশ অভ্যন্তরীণ কোন্দল ছিলো। যেসব বিষয় মিডিয়ার সামনে না এলেও অনেকটাই ওপেন সিক্রেট ছিলো। সব কিছু মিলে বেলা শেষে তাই ফলাফল জিরো।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল আগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির জন্য এক অশনী সংকেত। গত ৩ মাস আগেও বিএনপির কোন ধ্যনজ্ঞান ছিলো না ডাকসু নির্বাচন নিয়ে। কিন্তু, জামায়াতের শুরু থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা ছিলো সেই পরিকল্পনায় তারা শতভাগ সফলও। বিএনপি ভেবেছিলো গুপ্ত ছাত্রলীগের ভোটগুলো তারা অনায়াসে পাবে। কিন্তু, তাদের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে অর্থ দিয়ে হোক বা সম্পর্ক দিয়ে, যে কোন ভাবেই ভোটগুলো নিজেদের দলে ভিড়িয়েছে শিবির। তাই এখন থেকেই সতর্ক হয়ে ছাত্রদলের আগা-গোড়া তরুণদের দিয়ে পরিপূর্ণ করতে হবে বিএনপির, এমনটিই বলছেন বিশ্লেষকরা।
এম.কে
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

বাংলাদেশে যা হয়েছে তা বিপ্লব, আমাদের সেভাবেই স্বীকার করা উচিতঃ শিবশঙ্কর মেনন

হজ নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া নেই, বাড়ছে হজ নিবন্ধনের সময়

বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত রাজস্ব হারিয়েছে ভারতের হাসপাতালগুলো