2.2 C
London
November 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাস্তুচ্যুত অসহায় মানুষের কথা তুলে ধরে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বকে জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে।

 

মঙ্গলবার (০২ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় স্কটিশ পার্লামেন্টে ‘কল ফর ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও খরার মতো প্রাকৃতিক ঘটনায় বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব বিশ্বকে ভাগ করে নিতে হবে। এ ইস্যুতে ক্ষতি এবং ধ্বংস যথাযথভাবে সমাধান করতে হবে।

 

বাংলাদেশে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ৬০ লাখ জলবায়ু বাস্তুচ্যুত মানুষ রয়েছে। এর সঙ্গে মিয়ানমারের আরও ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বোঝা হিসেবে যুক্ত হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারি অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

 

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিকে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বেড়ে গেলে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আরও লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে।

 

তিনি বলেন, চরম তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, বন্যা ও খরা, অধিকতর তীব্র গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঋতু পরিবর্তন, নদী ভাঙন, সমুদ্রের লবণাক্ততা বাংলাদেশ ও অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

 

উন্নত দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কার্যকর ও পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন সমৃদ্ধি অর্জনের মূল চাবিকাঠি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল সরবরাহ করতে হবে। জলবায়ু তহবিল অভিযোজন এবং প্রশমনে অর্ধেক অর্ধেক হারে বিতরণ করতে হবে।

 

উন্নত দেশগুলোর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোকে অবশ্যই এনডিসি (জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান) পেশ করতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। উচ্চাভিলাষী প্রশমন প্রচেষ্টা ছাড়া শুধুমাত্র অভিযোজন ব্যবস্থা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব বন্ধ করতে বা গতি কমাতে যথেষ্ট নয়।

 

উন্নত দেশগুলোকে সাশ্রয়ী খরচে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে গ্রিন প্রযুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

 

জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য এটি একটি বড় হুমকি। যদিও বিশ্বব্যাপী কার্বন নির্গমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবদান দশমিক শূন্য ৪৭ শতাংশের কম।

 

প্রতি বছর বাংলাদেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবে নষ্ট হয়ে যায় বলে জানান সরকার প্রধান।

 

স্কটিশ পার্লামেন্টে পৌঁছুলে স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান।

 

অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা এবং সিভিএফ দূত সায়মা ওয়াজেদ হোসেন।

 

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ন্ত্রণ ও এ সংকট মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে আয়োজিত কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজের (কপ)-২৬তম সম্মেলনে যোগ দিতে স্থানীয় সময় রোববার (৩১ অক্টোবর)  বিকেল পৌনে ৩টার দিকে স্কটল্যান্ডে বৃহত্তম শহর গ্লাসগোতে যান প্রধানমন্ত্রী।

 

গ্লাসগো থেকে বুধবার (০৩ নভেম্বর) লন্ডন, সেখান থেকে ৯ নভেম্বর ফ্রান্স যাবেন তিনি। আগামী ১৩ নভেম্বর প্যারিস থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। ১৪ নভেম্বর সকালে দেশে পৌঁছানোর কথা তার।

 

৩ নভেম্বর ২০২১
নিউজ ডেস্ক

আরো পড়ুন

নিক ক্লেগকে গোপন তথ্য সরবরাহ করছেন সরকারি কর্মকর্তা!

আলজেরিয়ায় পিটিয়ে-পুড়িয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ৪৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

শপথ গ্রহণকালে ব্রিটেনের রানিকে ‘উপনিবেশকারী’ বললেন অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর

অনলাইন ডেস্ক