TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ট্রাইব্যুনালে শাহজাহান খানঃ আমি মুক্তিযোদ্ধা, আমাকে হ্যান্ডকাফ পরানো অমর্যাদাকর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হ্যান্ডকাফ দেখিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, আমাকে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছে, এটা আমার জন্য লজ্জাজনক ও অমর্যাদাকর।’

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা অপরাধের মামলায় রোববার অন্য আসামিদের সঙ্গে শাজাহান খানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এ সময় হাতকড়া পরানো নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন আসামি, পুলিশ, প্রসিকিউশন।

এর আগে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শাজাহান খান, হানাসুল হক ইনুসহ ১৭ জনকে হাতকড়া পরিয়ে প্রিজন ভ্যান থেকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নেওয়া হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে তাদের তোলা হয় কাঠগড়ায়।

আসামিপক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায় সাবেকমন্ত্রী-এমপিদের হাত পেছনমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে, যা লজ্জাজনক ও অমর্যাদাকর।

ট্রাইব্যুনালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে আসামিদের হ্যান্ডকাফ, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরানো হয়। তবে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, সামনের দিনে এখানে আর হ্যান্ডকাফ পরানো যাবে না, যারা এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহজাহান খান ট্রাইব্যুনালে বলেন, ‘অতীতে আমরা রাজাকারদের হাতকড়া পরাইনি, আমাদের কেন হাতকড়া পরানো হয়েছে? এটা লজ্জাজনক।’ এ সময় সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘আগে এই আসামিদের হ্যান্ডকাফ ছাড়াই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন ধরে তাদের হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ট্রাইব্যুনালে আনা হচ্ছে। বিশেষ করে আজ কাঠগড়ায় হাজির করার পরও কয়েকজন হ্যান্ডকাফ পরানো অবস্থায় ছিলেন।’

এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য জানতে চান ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘ওনাদের হ্যান্ডকাফ পরানোর প্র্যাকটিস তো এই ট্রাইব্যুনালে নেই, পরাচ্ছেন কেন?’ পুলিশের দুই সদস্য তখন বলেন, ‘আসামিদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট ও হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে।’

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আসামিদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের হ্যান্ডকাফ পরানোর নিয়ম রয়েছে। আর কোর্ট রুমে আসার আগেই সেটা খোলা হয়। তবে পুলিশ সদস্যরা আসামিদের আজকের আচরণ নিয়ে যেটা আমাদের বলেছেন, তা বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা।’

এ সময় শাহজাহান খান বলেন, ‘প্রিজন ভ্যান থেকে নামার আগেই আমাকে পেছনে দুই হাতমোড়া করে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছে। আর এজলাসে উঠানোর পর হ্যান্ডকাফ খোলা হয়েছে। আমি তখন আপত্তি জানিয়ে পুলিশকে বলেছি, তোমরা আমাকে নামার আগেই হ্যান্ডকাফ পরাচ্ছো কেন? তাহলে আমি কীভাবে গাড়ি থেকে নামবো? তারা আমার কোনো কথা শোনেনি।’

শাজাহান খান আরও বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। পরিবারের আরও ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার ন্যূনতম মর্যাদাটুকু চাই। সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এ সময় প্রশ্ন করেন, ‘আওয়ামী লীগ কি নিষিদ্ধ দল?’

এই মামলার ১৭ আসামিকে এদিন কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আনিসুল হক, ড. আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুক খান, সাবেক দুই উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, ডা. দীপু মনি, গোলাম দস্তগীর গাজী, বিচারপতি এ এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, সাবেক এমপি সোলায়মান মোহাম্মদ সেলিম ও সাবেক সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
এছাড়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এম.কে
২৩ এপ্রিল ২০২৫

আরো পড়ুন

আজ ঢাকা হতে শমসের মবিন চৌধুরী আটক

আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগের প্রধান

ভারী বর্ষণ, সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা