13.7 C
London
October 4, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবঃ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তিতে ১৫% সীমা, ইতিমধ্যেই ধস নেমেছে ভর্তি হারে

যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউস প্রকাশিত নতুন নথি “এ কমপ্যাক্ট ফর অ্যাকাডেমিক এক্সেলেন্স ইন হায়ার এডুকেশন” যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার নীতিকে আমূল পাল্টে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। নথিটি এমআইটি, ডার্টমাউথ ও ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়াসহ শীর্ষ ৯টি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক স্নাতক ভর্তির সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকবে এবং একক কোনো দেশ থেকে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে।

যদিও এই সীমা এখনো কার্যকর হয়নি, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা ইতিমধ্যেই কমতে শুরু করেছে। ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এসেছে মাত্র ৩,১৩,০০০ জন—যা আগের বছরের তুলনায় ১৯% কম। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ভর্তির হার ১২% হ্রাস পেয়েছে। ভারত থেকে ভর্তির হার কমেছে ৪৫% এবং চীন থেকে ১২%। আফ্রিকান শিক্ষার্থীর ভর্তিও ৩৩% হ্রাস পেয়েছে।

শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এই ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। রয়টার্সের তথ্যে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী গ্রহণে শীর্ষ ১০টি ক্যাম্পাসেই ভর্তির হার কমেছে—ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় আর্বানা-শ্যাম্পেইনে ১% থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটি অ্যাট বাফেলোতে ১৯% পর্যন্ত। তবে আন্তর্জাতিক নবীন শিক্ষার্থীর সংখ্যা সামান্য বাড়লেও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তির হার ভেঙে পড়েছে। ইলিনয়ে প্রথম বর্ষের স্নাতকোত্তর ভর্তিতে ২২% এবং বাফেলোতে ৫৮% হ্রাস হয়েছে।

ডি’পল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিস্থিতি আরও গুরুতর। সেখানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৩০% পতনের পর প্রশাসন নিয়োগ বন্ধ, উচ্চপদস্থদের বেতন কমানো ও ব্যয় সংকোচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়টির মোট ২১,০০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২,৫০০ জন ছিল বিদেশি। তবে নতুন ভর্তির সংখ্যা ৬২% কমে যাওয়ায় আর্থিক চাপ বেড়েছে।

শিক্ষার্থী সংকটের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রভাবও মারাত্মক হয়ে উঠছে। জেবি ইন্টারন্যাশনাল ও নাফসার হিসাব অনুযায়ী, এ বছর নতুন আন্তর্জাতিক ভর্তির হার ৩০–৪০% পর্যন্ত কমতে পারে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে এবং ৬০,০০০-এর বেশি চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়বে। অথচ ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা মার্কিন অর্থনীতিতে ৪৬ বিলিয়ন ডলার অবদান রেখেছিল এবং ৪ লাখ চাকরি সমর্থন করেছিল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রস্তাবিত সীমা কার্যকর হলে সংকট আরও গভীর হবে। তাদের মতে, এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো ভিসা প্রক্রিয়া সহজ ও পূর্বানুমানযোগ্য করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়তার ভিত্তিতে নয়, বরং যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী বাছাইয়ের স্বাধীনতা দেওয়া।

সূত্রঃ টাইমস অব ইন্ডিয়া

এম.কে
০৪ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

পুতিনের হৃদরোগে আক্রান্তের খবর নিয়ে শোরগোল!

কাতারের পর ইয়েমেনে ইসরায়েলি হামলাঃ ৯ নিহত, আহত শতাধিক

‘নিজেরাই সমাধান বের করবে’, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে ট্রাম্প