স্থানীয়ভাবে ‘পাফ’”নামে পরিচিত ডিসপোজেবল বা একক ব্যবহারের ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে ফ্রান্স। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি এক রেডিও বক্তৃতায় ফরাসি প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন জানান, নতুন ধূমপান বিরোধী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।
এর আগে জার্মানি, বেলজিয়াম ও আয়ারল্যান্ডসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে, ঘোষণা দিতে পারে যুক্তরাজ্যও।
সাধারণ সিগারেট বিক্রেতারাই ভ্যাপ বিক্রি করে থাকে। নয় ইউরোতে ৬০০টি পাফ পাওয়া যায়। একই দামে পাওয়া যায় ৪০টি সিগারেট।
পাফকে ‘শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য ফাঁদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ফ্রান্সের ন্যাশনাল একাডেমি অব মেডিসিন। তারা বলছে, চালাকির মাধ্যমে এটি বিক্রি হচ্ছে।
এলিজাবেথ বোর্নের মতে, কোম্পনিগুলোর প্রচারে শিশুদের মনে এমন ছাপ তৈরি হয় যে তার অভ্যস্ত হয়ে যায়, পরে তারা তামাকের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
ক্যাম্পেইনাররা এ জন্য প্রস্তুতকারীদের অভিযুক্ত করেন। তারা বলছেন, কিশোরদের লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে উজ্জ্বল রং ব্যবহার করা হয় যা মিষ্টির দোকানের কথা মনে করিয়ে দেয়। যেমন মার্শম্যালো, চকোলেট, হ্যাজেলনাট, তরমুজ ও আইস ক্যান্ডি।
ডিসপোজেবল ভ্যাপের বড় একটি অংশ আসে চীনের কারখানা থেকে।
অ্যালায়েন্স এগেইনস্ট টোব্যাকো (এসিটি) অনুসারে, ১৩-১৬ বছর বয়সীদের মধ্যে ১৩ শতাংশ অন্তত একবার ‘পাফ’ গ্রহণের চেষ্টা করেছে। বেশিরভাগ বলে যে তারা ১১ বা ১২ বছর বয়সে শুরু হয়েছিল।
নিষেধাজ্ঞাকে সুশীল সমাজের জন্য বড় বিজয় হিসেবে দেখছে এসিটি। তাদের মতে, ডিসপোজেবল ই-সিগারেট তরুণদের জন্য ধূমপানের প্রবেশদ্বার হিসাবে কাজ করছে। এটি মহামারীতে পরিণত হয়েছে। তামাক শিল্প যেভাবে শিশুদের আঁকড়ে ধরেছে তা ভয়ানক।
ক্যাম্পেইনাররা ডিসপোজেবল ই-সিগারেটের কারণে পরিবেশগত ক্ষতির কথাও তুলে ধরেছেন। গত বছর পরিবেশবাদী সংস্থা মেটেরিয়াল ফোকাসের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যুক্তরাজ্যে প্রতি সপ্তাহে ১০ লাখের বেশি ডিভাইস ফেলে দেয়া হয়।
প্রতিটি ডিসপোজেবল ই-সিগারেট প্লাস্টিকের তৈরি। এতে প্রায় দশমিক ১৫ গ্রাম লিথিয়ামের পাশাপাশি নিকোটিন লবণ ও ভারী ধাতুর প্রলেপসহ অপসারণযোগ্য ব্যাটারি থাকে।
এম.কে
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩