15 C
London
October 19, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার, কার্যালয় স্থাপনের সম্ভাবনা

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক বাংলাদেশ সফর করবেন। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবর তার ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। সফরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি অন্যান্য উপদেষ্টা, সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন জনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

সফরে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিস থেকে নিযুক্ত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিতে পারেন ভলকার টুর্ক। এ ছাড়া বাংলাদেশে একটি অফিস স্থাপন করতে চায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিস। এ বিষয়ে বড় আকারে আলোচনা হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভলকার টুর্কের টেলিফোন আলাপ হয়। ওই আলাপে জুলাই ও আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের জন্য ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।’

গত মাসে ভলকার টুর্কের ঢাকা সফরের একটি সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু পরে দুপক্ষের শিডিউল না মেলার কারণে তিনি আসেননি। তবে একই মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভলকার টুর্কের বৈঠক হয় বলে তিনি জানান।

পৃথিবীর ১৯টি দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের অফিস রয়েছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এসব অফিস প্রধানত মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ, সুরক্ষা, গবেষণা, সরকার, জাতীয় কর্তৃপক্ষ, নাগরিক সমাজ, ভুক্তভোগী এবং অন্য প্রাসঙ্গিক সহযোগীদের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদান; সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জনসাধারণের প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সহায়তার ব্যবস্থা করে থাকে।

সাধারণভাবে অফিস খোলার জন্য যে দেশগুলোর সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়, সেখানে যেকোনও স্থানে মানবাধিকার অফিসের অবারিত প্রবেশাধিকারের বিষয়টি উল্লেখ থাকে। এ ছাড়া অফিস চালানোর খরচ সংগ্রহ করা হয় অনুদানের মাধ্যমে।

বাংলাদেশ যদি অফিস খোলার অনুমতি দেয়, তবে সেটি হবে ২০তম অফিস।

মানবাধিকার ইস্যুতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ যেকোনও দেশের জন্য রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। কারণ জাতিসংঘ নিজে একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, যারা বৃহৎ শক্তির ইশারায় বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে সাবেক এক রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটি কোনও গোপন বিষয় নয় যে স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ, যাদের সঙ্গে বড় শক্তিধর দেশের সম্পর্ক তেমন ভালো নয়, তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় মানবাধিকার ইস্যুকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।’

আওয়ামী লীগ বা বিএনপি–যে রাজনৈতিক সরকারই ক্ষমতায় ছিল– তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যুতে জাতিসংঘের একটি মতবিরোধ ছিল। অফিস খোলার অনুমতি দেওয়া হলে ভবিষ্যতে যে রাজনৈতিক সরকারই ক্ষমতায় আসবে, তাদের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে তিনি জানান।

আরেক সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস অনুদানের অর্থে পরিচালিত হয় এবং ওই অর্থ যারা জোগান দেয়, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও ইস্যুতে বিরোধ হলে মানবাধিকার ইস্যুকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার একটি আশঙ্কা থাকে।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাতিসংঘের আগ্রহ আছে এবং এর অনেক বিষয় সর্বজনীন নয়। এর মধ্যে সমকামিতা বা সর্বজনীন শিক্ষা (স্কুলে যৌন শিক্ষাসহ অন্যান্য শিক্ষা) ইত্যাদি বিষয় রয়েছে। এ ধরনের বিষয়গুলো ধর্মীয় বা সামাজিক কারণে অনেক দেশে গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এগুলো যেহেতু মানবাধিকারের অংশ, সে জন্য ওই বিষয়গুলো নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের আগ্রহ থাকবে।’

পাহাড়ি অঞ্চলে বা দেশের অন্য অঞ্চলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের একটি প্রচ্ছন্ন চাপ আছে বাংলাদেশের উপর। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে সরকারিভাবে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে সেটি দেশের রাজনীতির জন্য বিরাট বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে তিনি জানান।

এম.কে
১৯ অক্টোবর ২০২৪

আরো পড়ুন

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ৩০ লাখ ইউরো ঋণ দিচ্ছে ইইউ

চলমান ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সব গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ ঘোষণা

শেখ হাসিনা পারিবারের সদস্য হওয়ায় চাপে যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক