16.4 C
London
October 5, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

দিল্লির কড়া নজরে ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পদ পাওয়া সার্জিও গোর

ভারতে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হতে যাচ্ছেন সার্জিও গোর। তবে তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব—দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বিশেষ দূতের পদ। একই সঙ্গে দ্বৈত ভূমিকায় আসা এই নিয়োগ ইতিমধ্যেই আঞ্চলিক কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করছে। বিশেষত, ভারত নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করছে তিনি কবে এবং কীভাবে পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেন।

২২শে সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে গোর বৈঠক করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। মার্কিন বিবৃতিতে বৈঠককে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ড. ইউনূস ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘মুক্ত, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন’ আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। আলোচনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা, রোহিঙ্গা সংকট ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উঠে আসে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার সার্ক পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ জোরদার করছে এবং আসিয়ানে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। বিষয়টি ভারতের ঘোষিত অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছে দিল্লি।

২৪শে সেপ্টেম্বর গোর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিসানায়েকের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি মার্কিন-শ্রীলঙ্কা অংশীদারিত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন এবং শ্রীলঙ্কার আঞ্চলিক নিরাপত্তা নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। ‘মুক্ত ও উন্মুক্ত ভারত মহাসাগর’ গড়ে তুলতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয়। ২৫শে সেপ্টেম্বর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গে তার বৈঠকে মার্কিন-ভুটান বন্ধুত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় হয়।

তবে পাকিস্তান প্রসঙ্গ এখনও স্পষ্ট নয়। সার্জিও গোর মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে পাকিস্তান সম্পর্কিত বৈঠকে ছিলেন কি না তা জানা যায়নি। ২৬শে সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাশাপাশি পাকিস্তানে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়। এ বছর ট্রাম্প ও মুনিরের এটি ছিল দ্বিতীয় বৈঠক।

ভারতের কাছে সার্জিও গোরের দ্বৈত নিয়োগ একটি সংবেদনশীল বিষয়। দুই দশকের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের নীতিকে আলাদা রেখেছিল। ওবামা প্রশাসনের সময় আফগানিস্তান-পাকিস্তান বিষয়ক বিশেষ দূত রিচার্ড হলব্রুকের ম্যান্ডেট থেকে ভারতকে বাদ দেওয়াও ছিল সেই কৌশলের অংশ। এবার নতুনভাবে ‘সংযুক্তকরণ’ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েনের সময়ে কূটনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দিল্লি। তবে ভারতীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, গোর ভারতে যোগ দেওয়ার পর তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করবেন।

১১ই সেপ্টেম্বর মার্কিন সিনেটের অনুমোদন শুনানিতে সার্জিও গোর বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তায় ভারতের ভূমিকা অপরিহার্য। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, একটি স্থিতিশীল দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সব দেশের স্বার্থে জরুরি। তার ভাষায়, মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্ব একবিংশ শতককে সংজ্ঞায়িত করবে এবং যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে।

সূত্রঃ টাইমস অব ইন্ডিয়া

এম.কে
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

সুইস ব্যাঙ্কে থাকা আদানিদের ৩৬৮৩ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত!

ফ্রান্স-যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলে পশ্চিম তীর দখলের হুমকি ইসরায়েলের

মানব মস্তিষ্কে পরীক্ষা চালানোর অনুমতি পেয়েছে নিউরালিংক