TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

নতুন করে ফিরছে ইলেকট্রিক গাড়ির ভর্তুকিঃ সর্বোচ্চ £৩,৭৫০ ছাড়, কারা পাবেন সুবিধা?

যুক্তরাজ্যে নতুন করে আবারও চালু হচ্ছে ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার সরকারি ভর্তুকি। ২০২২ সালে কনজারভেটিভ সরকার এই স্কিম বন্ধ করে দেওয়ার পর, এবার লেবার সরকার £৬৫০ মিলিয়নের একটি নতুন তহবিল ঘোষণা করেছে, যার আওতায় সর্বোচ্চ £৩,৭৫০ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যাবে নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি কিনলে।

এই ভর্তুকি পাবেন যেকোনো ব্যক্তি, তবে গাড়িটির মূল্য সর্বোচ্চ £৩৭,০০০ এর মধ্যে হতে হবে। ছাড়ের পরিমাণ নির্ধারিত হবে গাড়িটির পরিবেশবান্ধবতার ওপর ভিত্তি করে। সবচেয়ে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব গাড়িগুলো পড়বে ‘ব্যান্ড ওয়ান’-এ, যেখানে সর্বোচ্চ £৩,৭৫০ পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে। ‘ব্যান্ড টু’-তে থাকা গাড়িগুলোর জন্য বরাদ্দ সর্বোচ্চ £১,৫০০।

এই স্কিম চালু হবে চলতি সপ্তাহের বুধবার থেকে। গাড়ি নির্মাতারা ওই দিন থেকেই স্কিমের আওতায় আবেদন করতে পারবে। পরিবহন সচিব হেইডি আলেক্সান্ডার জানিয়েছেন, এই স্কিম কেবল জনগণের অর্থ সাশ্রয়ই করবে না, বরং দেশের গাড়ি শিল্পকে আধুনিকতার নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যেই ৮২,০০০-এর বেশি পাবলিক চার্জিং পয়েন্ট স্থাপন করেছি, যা পরিবারগুলোকে আত্মবিশ্বাসের সাথে ইভিতে রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ দেবে।”

আরএসি’র (RAC) নীতিমালা প্রধান সাইমন উইলিয়ামস বলেছেন, ভর্তুকির সুবিধাযুক্ত গাড়িগুলো আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শোরুমে দেখা যেতে পারে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভর্তুকির প্রণোদনায় মানুষ পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী গাড়ি বেছে নেবে, যা অর্থনীতি ও পরিবেশ—দুইয়ের জন্যই ইতিবাচক হবে।

সরকার এর পাশাপাশি চার্জিং সুবিধা সম্প্রসারণেও উদ্যোগ নিয়েছে। ইংল্যান্ডের বড় বড় এ-রোডে ইলেকট্রিক চার্জিং স্টেশনের জন্য সাইনবোর্ড বসানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একইসাথে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জন্য £২৫ মিলিয়নের একটি স্কিম চালু হয়েছে, যাতে বাড়ির সামনে পার্ক করা গাড়িগুলো চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা সহজ করা যায়।

গাড়ি বিক্রয় খাতেও এই ভর্তুকি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারের “জিরো-এমিশন ভেহিকেল (ZEV) ম্যান্ডেট” অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি গাড়ি কোম্পানির অন্তত ২৮% নতুন গাড়ি নির্গমনমুক্ত হতে হবে। তবে চলতি বছরের প্রথমার্ধে এই হার ছিল মাত্র ২১.৬%। নতুন নিয়মে কিছু শিথিলতা আনা হয়েছে যাতে লক্ষ্য পূরণ না করতে পারা নির্মাতারা সহজেই জরিমানা এড়াতে পারে।

এদিকে বিরোধী কনজারভেটিভ দলের ছায়া পরিবহন সচিব গ্যারেথ বেকন সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “সরকার দেশ প্রস্তুত না থাকা সত্ত্বেও পরিবারগুলোকে ইলেকট্রিক গাড়ি কিনতে বাধ্য করছে। এই স্কিমে জনগণের করের টাকাই অপচয় হবে।” তিনি আরও বলেন, “গত বছর মাত্র ১০% ব্যক্তিগত গাড়ি ক্রয় ছিল ইলেকট্রিক – অর্থাৎ জনগণ এই পণ্যটি এখনো চায় না।”

এমনকি কনজারভেটিভ পরিবেশ নেটওয়ার্কও এই স্কিমকে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বলে মন্তব্য করেছে। তাদের মতে, গাড়ির দাম এখন কমে আসছে, তাই বরং চার্জিং অবকাঠামোতে বিনিয়োগই হওয়া উচিত। তাহলে নতুন প্রজন্ম ইলেকট্রিক গাড়ির দিকে এগোবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে।

সূত্রঃ আইটিভিএক্স

এম.কে
১৫ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

লন্ডনে ডেলিভারি রাইডারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু

ব্রিটেনে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশুরা স্থূলতায় এগিয়ে

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কায় প্রস্তুতির আহ্বান, নাগরিকদের রেডিও কিনে রাখতে বলল ব্রিটিশ সরকার