নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেঁধে দিতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাজ্য। সুপারমার্কেটগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা মন্ত্রীদের। ব্রিটিশ নাগরিকদের ব্যয়ভার নাগালের মধ্যে রাখতে নেয়া হবে পদক্ষেপ। বিশেষ করে খাদ্য ও পানীয়র দাম গত ৪০ বছরের তুলনায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এ মুহূর্তে রুটি ও দুধের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ প্রচেষ্টাটি নতুন নয়। এর আগে ১৯৭০-এর দশকে দাম বাড়ার বিপরীতে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল ব্রিটেনে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বার্কলে বলেছেন, ‘সুপারমার্কেটগুলোর সঙ্গে সরকার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য ও জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। ক্রেতার সাধ্যের বিপরীতে সরবরাহ চেইন যেন বাঁধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকেও রাখা হয়েছে দৃষ্টি।’
সম্প্রতি ফরাসি সরকার দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বিশেষ চুক্তি করে, যেন আগামী তিন মাস দাম ন্যূনতম রাখা হয়। মার্চে ঘোষিত চুক্তির অধীনে বিক্রেতারাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোন কোন পণ্যে দাম সীমিত রাখা হবে। সেসব পণ্যের গায়ে বিশেষ লোগো ব্যবহার করা হয় পরবর্তী সময়ে।
যুক্তরাজ্যের নতুন নীতিমালা গ্রহণের ক্ষেত্রে পদ্ধতিটিকে বিবেচনায় রাখা হতে পারে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, দাম নির্ধারণের জন্য বাধ্যতামূলক কোনো নীতিমালা তৈরি করা হবে না। যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা হবে স্বেচ্ছায়।
সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার একটা বাড়তি চাপ রয়েছে। বিশেষ করে খাদ্যের দাম বেশি থাকাটা ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। খাদ্য ও কোমল পানীয়র দাম গত ১২ মাসে বেড়েছে ১৯ শতাংশ, যা পশ্চিম ইউরোপে সর্বোচ্চ। ইউনিলিভারের মতো শীর্ষ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর দাবি, তারা দোকান গুলোকে মূল্যস্ফীতির হাত থেকে উদ্ধারে কাজ করছে। যদিও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে সুযোগ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
ব্রিটিশ খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান অ্যান্ড্রু ওপি দাবি করেছে, দামের ক্ষেত্রে নতুন পদক্ষেপ খুব বেশি পরিবর্তন নিয়ে আসবে না। কারণ খাদ্যের দাম বাড়াটা সরাসরি যুক্ত জ্বালানি, পরিবহন ও শ্রমমজুরি বাড়ানোর জন্য। একই সঙ্গে উৎপাদনকারী ও কৃষকদের পেছনেও বেড়ে গেছে খরচ। এতকিছুর পরও ব্রিটিশ মুদি দোকানগুলো দাম কম রাখার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এম.কে
৩০ মে ২০২৩