21.4 C
London
August 8, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

পূর্ব লন্ডনে অবৈধভাবে ভাড়াটে রাখার দায়ে বাংলাদেশি বাড়িওয়ালাকে জরিমানা

পূর্ব লন্ডনের একটি আবাসিক ভবনে আইনবিরোধীভাবে ১৮ জন ভাড়াটে রাখার দায়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাড়িওয়ালা সামছুর হুদাকে মোট ৩৩,০০০ পাউন্ড জরিমানা করেছেন আদালত। স্থানীয় কাউন্সিলের আবাসন ও নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে, তিনি তার সম্পত্তিতে ভাড়াটেদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না করেই বিপুলসংখ্যক মানুষকে বসবাসের অনুমতি দিয়েছিলেন।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আবাসন দল জানায়, বাড়িটি “হাউস ইন মাল্টিপল অকুপেশন” (HMO) লাইসেন্স ছাড়াই ভাড়া দেওয়া হচ্ছিল, যা যুক্তরাজ্যের আবাসন আইনে একটি গুরুতর অপরাধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কাউন্সিল কর্মকর্তারা হঠাৎ অভিযান চালিয়ে দেখেন, অল্প জায়গায় গাদাগাদি করে মানুষ বসবাস করছে। রান্নাঘর, বাথরুম ও অন্যান্য শেয়ারড সুবিধাগুলো ছিল অপরিষ্কার, অপর্যাপ্ত ও অস্বাস্থ্যকর।

তদন্তে দেখা যায়, বাড়িটির কক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ও আলো নেই, অগ্নিনিরাপত্তার সরঞ্জাম সঠিকভাবে কাজ করছে না, এবং জরুরি পরিস্থিতিতে বের হওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ভাড়াটেরা জানিয়েছেন, তারা অত্যধিক ভাড়া দিয়েও অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ পরিবেশে থাকতে বাধ্য হয়েছেন।

আদালতে কাউন্সিলের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, সামছুর হুদা ইচ্ছাকৃতভাবে আবাসন আইন ভঙ্গ করেছেন এবং অতিরিক্ত লাভের জন্য মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছেন। বিচারক রায়ে বলেন, “এ ধরনের লোভী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ সহ্য করা হবে না। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।”

ফলস্বরূপ, আদালত তাকে ৩৩,০০০ পাউন্ড জরিমানা ও অতিরিক্ত আইনি খরচ পরিশোধের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ রোধে তার ভাড়া দেওয়ার কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মুখপাত্র জানান, “আমরা আমাদের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু বসবাসের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যারা অবৈধভাবে বাড়ি ভাড়া দিয়ে ভাড়াটেদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

যুক্তরাজ্যে হাউস ইন মাল্টিপল অকুপেশন (HMO) পরিচালনা করার জন্য কঠোর নিয়মকানুন রয়েছে। কোনো বাড়িতে পাঁচজন বা তার বেশি অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তি একসঙ্গে থাকলে এবং সুবিধা শেয়ার করলে, বাড়ির মালিককে অবশ্যই স্থানীয় কাউন্সিল থেকে বিশেষ লাইসেন্স নিতে হয়। আইন ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা বা আদালতের মাধ্যমে আরও বড় আর্থিক শাস্তি হতে পারে।

এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং আশা করছেন, এর মাধ্যমে এলাকার অন্যান্য অবৈধ বাড়িওয়ালারা সতর্ক হবেন। এক প্রতিবেশী বলেন, “আমরা বহুদিন ধরে দেখছিলাম বাড়িটিতে অস্বাভাবিক ভিড়। এতে আশপাশের পরিবেশও খারাপ হচ্ছিল। অবশেষে ন্যায়বিচার হলো।”

এই রায়ের মাধ্যমে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আবারও স্পষ্ট করলো, পূর্ব লন্ডনে অবৈধ ও বিপজ্জনক আবাসন ব্যবসার বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি অব্যাহত থাকবে।

সূত্রঃ দ্য স্ট্যান্ডার্ড

এম.কে
০৮ আগস্ট ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে ভিজিট ভিসায় কাজের সুযোগ

দেশে জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনার ভ্যাকসিন অনুমোদন

অনলাইন ডেস্ক

১০ বছরে সবচেয়ে কঠিন বাজারে যুক্তরাজ্য, বাড়ির দাম কমেছে, বিক্রেতারা চাপে