ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে এক ভয়াবহ এবং অস্বাভাবিক ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে। ৬৯ বছর বয়সী ফরাসি রেস্তোরাঁ মালিক ফিলিপ শ্নাইডার এবং তার ৪৩ বছর বয়সী সঙ্গী নাথালি কাবুবাসির বিরুদ্ধে জর্জ মেইশলার নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে তার দেহাংশ কেটে রান্না করার অভিযোগে এই সপ্তাহে আদালতে বিচার শুরু হয়েছে।
২০২৩ সালে নিখোঁজ হওয়ার পর জর্জ মেইশলারের মেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হলে চমকপ্রদ সব তথ্য সামনে আসে। তদন্তে উঠে আসে, শ্নাইডার এবং কাবুবাসি মেইশলারের বনাঞ্চলের মধ্যবর্তী বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে তাকে মাটিতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন, এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর নিজেদের দোষ গোপন করতে মৃতদেহটি কেটে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেন তারা।
তদন্তে আরো জানা গেছে, শ্নাইডার তার বাড়ির রান্নাঘরে একটি পাত্রে মেইশলারের দেহাংশের কিছু অংশ রান্না করেন। ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি তথাকথিত “ধর্মীয় আচারের” অংশ ছিল। পরবর্তীতে দেহাবশেষের অন্যান্য অংশ পুড়িয়ে ফেলা হয়।
ফ্রান্সের গণমাধ্যম France3-এর বরাতে জানা যায়, শ্নাইডারের আইনজীবী লুক আবরাটকিয়েভিচ বলেন, “তারা দেহটি কেটে রান্না করে, এবং পরে পুড়িয়ে ফেলে। ঘটনাটি নিষ্ঠুর, কিন্তু বাস্তবতাই এমন। এটি একটি ব্যর্থ ডাকাতির ফল যা এক ভয়ংকর পরিণতির দিকে গিয়েছে।”
আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে ফিলিপ শ্নাইডার বলেন, তিনি তখন মদ্যপান ও মাদকাসক্তির জীবনে নিমজ্জিত ছিলেন। প্রতিবেশীর বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটে। তিনি বলেন, “আমি একটি গুরুতর ভুল করেছি। তারপর একটার পর একটা ভুল করতে থাকি। সেই ভুলগুলোর মূল্য আমাকে চরমভাবে দিতে হবে।”
শ্নাইডার ও কাবুবাসি দক্ষিণ ফ্রান্সের কামারেস অঞ্চলে বসবাস করতেন। তারা একসময় ইউরোপের বিভিন্ন নামিদামি রেস্তোরাঁয় কাজ করেছেন এবং ভ্রমণ করেছেন। পরে কোভিড-১৯ মহামারির আগে সেন্ট-সেরন-স্যুর-রঁসে একটি পিজারিয়া চালু করেন।
এখন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে হত্যা, দেহ বিকৃতি, প্রমাণ লোপাট এবং অপরাধ লুকানোর। ফরাসি আইন অনুযায়ী, দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের সাজা হতে পারে বলে জানা যায়।
সূত্রঃ মিরর
এম.কে
২০ মে ২০২৫