ফিলিস্তিনি জনগণের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ইসরায়েলে কখনও নিরাপদ হবে না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। শুক্রবার ইসরায়েলকে সতর্ক করে এমন বার্তা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সদ্য নিয়োগ পাওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ক্যামেরন পশ্চিম তীরের রামাল্লা সফরের সময় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনিদের ওপর যে সহিংসতা চালিয়েছেন সেটিকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেন ডেভিড ক্যামেরন। তিনি এই ধরনের ঘটনা রোধে ইসরায়েলকে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এবং এই অঞ্চলে মানবাধিকারের মান সমুন্নত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছে, ‘পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার রিপোর্ট আতঙ্কজনক। ইসরায়েলকে অবশ্যই এই সহিংসতা রোধ করতে হবে এবং দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন শুক্রবার বলেছেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলে হতাহতের সংখ্যা খুব বেশি। সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলি নেতাদের আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানান।
ক্যামেরন বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে একটানা সংলাপ করে যাচ্ছি এবং মানবিক আইন, বেসামরিক হতাহতের বিষয়ে এই বিষয়গুলো তুলে ধরছি। কিন্তু ইসরায়েলের আত্মরক্ষার এবং তাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার অধিকার রয়েছে।
কয়েক বছর রাজনীতি থেকে দূরে থাকার পর সম্প্রতি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডেভিড ক্যামেরন। এরপরই তিনি বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফর করেন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ইসরায়েলকে গাজায় আরও সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দিতে এবং বেসামরিক মৃত্যু কমাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।
শুক্রবার থেকে হামাস ও ইসরায়েলের সম্মতিতে শুক্রবার থেকে চারদিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে হামাস ২৫ বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। আর ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ৩৯ ফিলিস্তিনিকে। এছাড়া গাজায় শুক্রবার ত্রাণবাহী ২০০ ট্রাক প্রবেশ করেছে।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের গত ৭ অক্টোবরের আকস্মিক হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েল। তবে সম্প্রতি সেই সংখ্যা কমিয়ে ১২০০ করা হয়েছে। এছাড়া হামাস ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে বলে জানায় নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এরপর থেকে গাজায় ও পশ্চিম তীরে নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। গাজার আবাসিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতাল, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার গুদাম, খাবারের দোকানসহ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যায়নি। এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬০০টিরও বেশি শিশু। নিহত বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী।
সূত্রঃআনাদুলু এজেন্সি
এম.কে
২৭ নভেম্বর ২০২৩