যুক্তরাজ্য সরকারের জালিয়াতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব। ১২ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লেভারলি জালিয়াতদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন। জালিয়াতি রোধ ও জালিয়াতদের ধরতে প্রত্যেককে লড়াই করতে হবে বলে তিনি জন সাধারণের উদ্দেশ্যে মতামত জানান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্যানুযায়ী জানা যায়, ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে প্রায় ৪০% অপরাধ জালিয়াতির মাধ্যমে সংগঠিত হচ্ছে। সারাবছরের হিসাবে প্রায় ৩.২ মিলিয়ন অপরাধ সংগঠনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জালিয়াতি দায়ী। যদিও গত বছরের তুলনায় এই বছরে ১৩% জালিয়াতি অপরাধ কমেছে বলে জানিয়েছে ইউকে পরিসংখ্যান ব্যুরো। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের সমাজে প্রতি বছরে জালিয়াতি কিংবা জোচ্চুরির মাধ্যমে ৬.৮ বিলিয়ন পাউন্ডের ক্ষতিসাধন ঘটে বলেও জানা যায়।
গত ৯ বছরে স্কটল্যান্ডে জালিয়াতির হার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। প্যানাডেমিক সময়কালে ফ্রড বা জালিয়াতির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে ফ্রড বা জালিয়াতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হলে সোচ্চার হবার সাথে সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য স্যোশাল মিডিয়া ও টিভি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচার করা উচিত। যদিও সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে তবে জনগনকেও সতর্ক হতে হবে। সরকারের ভুমিকার প্রশংসার সাথে সাথে নানা পর্যালোচনাও রয়েছে। অতিরিক্ত কঠিন আইন যখন মানুষকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলে তখন দ্রুত সেটা ছিড়েও যেতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বরাষ্ট্রসচিব জেমস ক্লেভারলি বলন, আমাদের সাহসী ফ্রড বিরোধী ব্যবস্থা ব্রিটিশ জনগণের জন্য চালু করা রয়েছে। এই নতুন অভিযানটি আমাদের জন্য একটি অস্ত্র। অনলাইন ভিত্তিক ফ্রড এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে বিধায় সকলকে সচেতন হওয়াও জরুরি। আমরা ৪০০ অভিজ্ঞ গবেষক নিয়োগ দিয়েছি অনলাইন ফ্রড মোকাবেলায়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব দ্রুত থামুন, কিছু সময় নিয়ে ভাবুন, নিজেকে সংযত করুন। তাছাড়া সতর্কীকরণ বার্তা ছড়িয়ে দিন সকলের কাছে।
নিরাপত্তা মন্ত্রী টম টিউগেনহাট বলেন, জালিয়াতি একজন মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে ফেলে। তাই নিজের আইডেন্টিফিকেশনকে কারো সাথে শেয়ার করা হতে বিরত থাকুন। নিজে যতটুকু সতর্কতা বিষয়ে জ্ঞান রাখেন তা পরিচিত জনদের সাথে আলোচনা করে জানিয়ে দিন।
জাতীয় অপরাধ সংস্থার উপনির্দেশক নিক শার্প বলেন, ফ্রড যুক্তরাজ্যের সর্বাধিক প্রবল অপরাধ, যা অর্থনৈতিক এবং মানসিকভাবে মানুষকে প্রভাবিত করে। অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে যায় জালিয়াতির খপ্পরে পড়ে। তাই স্টপ ফ্রড অভিযানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যদি আপনি কোনো ফ্রড বা জালিয়াতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হোন তাহলে নীচের ওয়েবসাইট ঠিকানায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ, www.gov.uk/stopthinkfraud
উল্লেখ্য যে, স্টপ ফ্রড স্ট্র্যাটেজি কনজার্ভেটিভ সরকার কর্তৃক ২০২৩ সালের মে মাসে ঘোষণা করেছিল। যা কনজারভেটিভ সরকারের জন্য একটি মাইলস্টোন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
সূত্রঃ গভ.ইউকে
এম.কে
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪