১৯৭১ সালের এই দিনে শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য পাকিস্তানের কাছে আবেদন জানান ব্রিটিশ সংসদসদস্যরা।
যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে ৩ আগস্ট বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১৩০ জনের বেশি সদস্য আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য পাকিস্তানের কাছে আবেদন জানান। আবেদনকারী এমপিরা বলেন, শেখ মুজিবের মুক্তিই বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমাধানের প্রথম পদক্ষেপ। লেবার পার্টির এমপি রেজিল্যান্ড প্রেন্টিস পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার আলেক ডগলাস হোমকে শেখ মুজিবুর রহমানের নিরাপত্তা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে বলেন। উত্তরে ডগলাস হোম বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্য সময়ে যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তানের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, তা এখন প্রকাশ না করাই ভালো।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে এদিন রাতে পাকিস্তান ও গ্রিসকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করার বিধান রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য বিলটি পাস হয়। তবে বিলের কয়েকটি বিধানের ফাঁকফোকরে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ইচ্ছা করলেই সাহায্য করার সুযোগ থেকে যায়। প্রতিনিধি পরিষদের অধিকাংশ সদস্যই এতে সমর্থন জানান।
সোভিয়েত সংবাদপত্র প্রাভদায় এই দিন পাকিস্তানের ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুমকির প্রতি আবার পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তারা উল্লেখ করে, ভারত এ ব্যাপারে দৃঢ় মনোভাব দেখিয়েছে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন যেসব ত্রাণসামগ্রী পূর্ব পাকিস্তানে পাঠিয়েছে, তা ব্যবস্থাপনার জন্য জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সেখানে যাচ্ছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট এর আগে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে পূর্ব পাকিস্তানে মানবিক সাহায্য দিতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তার আলোকেই জাতিসংঘ পূর্ব পাকিস্তানে মানবাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করবে। পর্যবেক্ষক পাঠানো সম্পর্কে যে খবর বেরিয়েছে, তা ভিত্তিহীন।
জাপানের রাজধানী টোকিওতে পরমাণু অস্ত্রবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ ওঠে। বিশ্ব শান্তি পরিষদের মহাসচিব এইচ ডি মালব্য মে মাসে পরিষদের বুদাপেস্ট সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাতে বাংলাদেশে গণনির্যাতনের শিকার বাঙালিদের প্রতি সহানুভূতি জানানো হয়েছে। পাকিস্তানি প্রতিনিধি তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বিশ্ব শান্তি পরিষদ ভারতের মুসলমান নিধন সম্পর্কে কিছুই বলেনি। এ সময় প্রতিনিধিদের ধিক্কারে তার বক্তব্য চাপা পড়ে যায়।
৩ আগস্ট ২০২১
এনএইচ