25.1 C
London
September 19, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বসুন্ধরা চেয়ারম্যান পরিবারের বিদেশি বিনিয়োগ অবরুদ্ধ, দুবাইয়ে ফ্ল্যাট জব্দ

দেশের অন্যতম বৃহৎ আবাসন ও শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাজ্যে ছয়টি কোম্পানির বিনিয়োগ অবরুদ্ধ করার পাশাপাশি দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, উপপরিচালক নাজমুল হোসেন আদালতে এ বিষয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করে।

আদালতের নির্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের নামে যুক্তরাজ্যে একাধিক কোম্পানিতে বিনিয়োগ অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

স্লোভাকিয়ান কোম্পানি ক্যালকাট্রুনিক হোল্ডিংয়ে ৫ হাজার ইউরোর বিনিয়োগ।

স্লোভাকিয়ান কোম্পানি জিএজিএজিইউজিইউতে ৫ হাজার ইউরোর বিনিয়োগ।

যুক্তরাজ্যের ওয়ার্ল্ডেরা কর্পোরেশন লিমিটেডে ১ হাজার শেয়ারের বিনিয়োগ।

যুক্তরাজ্যের এএসডব্লিউএ হোল্ডিংস লিমিটেডে ৫ হাজার শেয়ারের বিনিয়োগ।

এছাড়া, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহানের নামে যুক্তরাজ্যের ইউরোএশিয়া টেলিভিশন নেটওয়ার্ক লিমিটেডে ৫ হাজার শেয়ারের বিনিয়োগ এবং তার ভাই, বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাফওয়ান সোবহানের নামে গ্লোবাল মাল্টি ট্রেড লিমিটেডের বিনিয়োগও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

এদিকে, আদালত দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় ১১ নম্বর ফ্লোরে সায়েম সোবহান আনভীরের নামে থাকা ফ্ল্যাট জব্দের নির্দেশ দিয়েছে।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আহমেদ আকবর সোবহান এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তাধীন।

“তাদের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জন, হস্তান্তর ও অর্থ রূপান্তরের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন নথি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রধান সন্দেহভাজন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, তার স্ত্রী আফরোজা বেগম, ছেলে সায়েম সোবহান আনভীর, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহান, ছেলে সাদাত সোবহানের স্ত্রী সোনিয়া ফেরদৌস সোবহান, ছেলে সাফিয়াত সোবহান, সাফওয়ান সোবহান এবং তার স্ত্রী ইয়াশা সোবহানসহ পরিবারের একাধিক সদস্য এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত।”

দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, বসুন্ধরা গ্রুপের এই পরিবার বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করে, যার একটি অংশ বাংলাদেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে। তারা যুক্তরাজ্য, দুবাই ও স্লোভাকিয়ায় বিনিয়োগ করেছে।

আদালতে দুদকের আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে বিদেশে মূলধন স্থানান্তরের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের কেউই এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি নেয়নি।

এছাড়া, বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তারা তাদের সম্পত্তি ও আয়ের তথ্য আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে বাধ্য থাকলেও, তারা ওই বিদেশি বিনিয়োগের তথ্য গোপন করেছে। এতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, তারা অবৈধ অর্থ ব্যবহার করে এই সম্পত্তিগুলো অর্জন করেছে।

গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আগের সরকারের সুবিধাভোগী বড় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো তদন্ত শুরু করে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) বসুন্ধরাসহ পাঁচটি বড় প্রতিষ্ঠানের মালিকদের লেনদেনের তথ্য অনুসন্ধান শুরু করে। তাদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য জানতে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়।

এরপর, গত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আহমেদ আকবর সোবহান ও তার চার ছেলেসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়। একই মাসে আদালত বসুন্ধরা চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে।

এছাড়া, গত সেপ্টেম্বর মাসে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আহমেদ আকবর সোবহান ও তার ছেলে সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার জমি দখল এবং অর্থপাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এম.কে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

ভারতে ‘বৈধভাবে’ থাকার সময় ফুরিয়ে আসছে শেখ হাসিনার

ভারতের কবজা থেকে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা অবমুক্ত করল বিজিবি

এইচআরডব্লিউ থেকে আইন উপদেষ্টাকে চিঠি, ‘শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড নয়’