অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃক পাপুয়া নিউগিনিতে ১০ বছর ধরে পরিচালিত শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ক্যাম্প উচ্ছেদ করা হতে পারে বলে গার্ডিয়ানের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়। তাছাড়া আশ্রয়প্রার্থীদের চিকিৎসা এবং সুরক্ষা পরিষেবাগুলি বন্ধ করে দেওয়াও হতে পারে।শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং খাবারের বিলগুলি প্রদান করা হয়নি অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গত এক বছর ধরে।
খবরে জানা যায়, ৬৪ জন আশ্রয়প্রার্থী মধ্যে অনেকেই দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ ও খাবার ছাড়াই ক্যাম্পে বাস করছেন।
গার্ডিয়ানের তদন্তে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ান-অর্থায়িত মানবিক কর্মসূচির বিভিন্ন বিল অনেকদিন যাবত পরিশোধ করা হয় নাই। শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য সুরক্ষা, পরিবহন, ওষুধ এবং আবাসন পরিষেবা প্রদানের জন্য নিযুক্ত এক ডজন পিএনজি সংস্থার বিল প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বাকি পড়েছে।
তাছাড়া অস্ট্রেলিয়া দ্বারা অর্থায়িত পিএনজির মানবিক কর্মসূচীর বিভিন্ন দূর্নামও রয়েছে। তারা অবহেলা এবং পদ্ধতিগত দুর্নীতির অভিযোগ সহ বিভিন্ন বিতর্কে জর্জরিত।
পিএনজি সরকার সম্প্রতি এইসব মানবিক কর্মসূচির কার্যক্রমের তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে। ১৬ নভেম্বর পিএনজির চিফ মাইগ্রেশন অফিসার স্ট্যানিস হুলাহাউকে একটি চিঠিতে সাতজন পরিষেবা সরবরাহকারী অভিযোগ করেছেন, ২০২২ সালের ১ নভেম্বর থেকে তাদের অর্থ প্রদান করা হয়নি। পিএনজির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মূসা মালাদিনা পরিচালিত একটি পরিষেবা সরবরাহকারী জানায় ২৩ নভেম্বর হতে তারা শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের সমস্ত পরিষেবা বন্ধ করে দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ান এবং পিএনজি সরকার শরণার্থীদের সহায়তার জন্য মিলিয়ন ডলার চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল। উভয় সরকার আলাদাভাবে দাবি করে তারা অর্থায়নের জন্য দায়বদ্ধ নয়।
অস্ট্রেলিয়ান সরকার জানায়, তারা পিএনজিতে সমস্ত শরণার্থী পুনর্বাসনের জন্য মানবিক কর্মসূচিকে পুরোপুরি অর্থায়ন করেছে এবং বাকি অংশ এখন পিএনজি সরকারের দায়িত্ব। তবে পিএনজি অস্ট্রেলিয়ান সরকারের এই দাবি মেনে নিতে নারাজ।
অস্ট্রেলিয়ান এবং পিএনজি উভয় সরকারই বলে চুক্তিটি কোনো গোপন চুক্তি নয়। তবে উভয় সরকারই চুক্তির কোনো বিবরণ প্রকাশ করতে রাজি নন। যদিও চুক্তিটি ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বলে মনে করা হয় তবে অস্ট্রেলিয়া কোনো তথ্য প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য যে উচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া একজন শরণার্থী বলেন, তিনি আশঙ্কা করেন পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তারা যদি আবাসন থেকে শরণার্থীদের বের করে দেয় তবে আমাদের যাওয়ার কোনও জায়গা নেই।
এম.কে
১৭ নভেম্বর ২০২৩