পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির সব বড় নেতা ও সংসদ সদস্য আত্মগোপনে। বিতর্কিত শাসনব্যবস্থার কারণে ক্ষমতার পালাবদলে তারা আছেন বিপাকে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ায় তারা নিতে পারছেন না বেশিরভাগ সুবিধা। এভাবেই একটি বিষয়ে বিপাকে পড়েছেন সিলেট বিভাগের আওয়ামী লীগের সাবেক চার এমপি।
তারা হলেন- হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, হবিগঞ্জ-২-এর ময়েজ উদ্দিন শরীফ, সুনামগঞ্জ-১ আসনের রণজিৎ চন্দ্র সরকার ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের ড. মো. সাদিক।
জানা যায়, দায়িত্বে থাকাকালীন শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুবিধা নিয়েছিলেন দেশের ৫২ জনপ্রতিনিধি। এর মধ্যে ছয়জন গাড়ি খালাস করেও নিয়ে গেছেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নিয়মমাফিক এসব সুবিধা আর পাচ্ছেন না সাবেক হয়ে যাওয়া এই এমপি-মন্ত্রীরা। বিলাসবহুল এসব গাড়ি ছাড়াতে সাবেক জনপ্রতিনিধিদের গুনতে হবে শুল্ক বাবদ ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা। এই বিশাল অঙ্ক দিয়ে তারা গাড়ি ছাড়াবেন কি না, সেটা নিয়েও উঠেছে বড় প্রশ্ন। এছাড়া এই ৪ সাংসদের অনেকেই এখন পলাতক।
এই ৫২টি গাড়ির মধ্যে টয়োটা, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগট, ল্যান্ড ক্রুজার ও ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে কিছু গাড়ি এসেছে, আবার কিছু গাড়ি আসার পথে। এসব গাড়ির ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি তিন থেকে চার হাজার সিসি। সবগুলো গাড়ির বাজারমূল্য প্রায় ৬১ কোটি টাকা। কিন্তু প্রতিটি গাড়ির কর বাবদ শুল্ক পরিশোধ করলে দাম ঠেকবে ৮ থেকে ৯ কোটি টাকায়।
শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা বিলাসবহুল একটি গাড়ির প্রকৃত দাম ১ থেকে দেড় কোটি টাকার মধ্যে। কিন্তু ক্ষমতায় থাকাকালীন এসব জনপ্রতিনিধি প্রতি গাড়িতে ৮২৬ দশমিক ৬ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতেন। সে ক্ষেত্রে তাদের এ সুবিধা দিতে গিয়ে সরকারকে প্রতি গাড়িতে রাজস্ব বাবদ হারাতে হতো অন্তত ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা। কিন্তু ক্ষমতা না থাকায় এখন শুল্কমুক্ত সুবিধাটি আর পাবেন না তারা। সে ক্ষেত্রে ১ কোটি টাকার একটি গাড়ি খালাসে তাদের এখন গুনতে হবে অন্তত পাঁচ থেকে সাত গুণ বাড়তি টাকা। আর শুল্ক শোধ না করলে গাড়িগুলোও খালাস করতে পারবেন না তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস বলছে- জনপ্রতিনিধিরা ক্ষমতায় থাকাকালীন যেসব বিলাসবহুল গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় এনেছেন তার মধ্যে ছয়টি গাড়ি খালাস হয়েছে। বাকি গাড়ি খালাস করতে শুল্ক শোধ করতেই হবে। অন্যথায় গাড়িগুলো কার শেডে অথবা বন্দরের মাল্টিপল শেডে রাখা হবে।
এম.কে
৩১ আগস্ট ২০২৪