বর্তমান যুক্তরাজ্য সরকার এসাইলাম ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থায় আছে। আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণে সুনাক সরকারের কাজ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সাবেক ইংল্যান্ড ফুটবলের কিংবদন্তি গ্যারি লিনেকারের একটি বক্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাক্তন ইংল্যান্ড সকার অধিনায়ক, যিনি বিবিসির সর্বোচ্চ বেতনভোগী উপস্থাপক, সপ্তাহের শুরুতে ব্রিটেনের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে টুইট করার পর হতেই ঝামেলার শুরু।
গ্যারি লিনেকারের মন্তব্যের কারণে বিবিসি তার ফুটবল হাইলাইটস প্রোগ্রাম “ম্যাচ অফ দ্য ডে” তে অন্যান্য উপস্থাপকেরা গ্যারি লিনেকারের সাথে বসতে অপারগতা জানাচ্ছে এবং একাত্মতার সাথে কাজ করতে অস্বীকার করছে বলে শনিবারের অনুষ্ঠান মাত্র ২০ মিনিট স্থায়ী করে।
গ্যারি লিনেকার তার টুইট বার্তায় বলেছিলেন, “যুক্তরাজ্য কনজারভেটিভ সরকার ১৯৩০ সালের জার্মানির মতো আচরণ শুরু করেছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম লোক ইংল্যান্ডে আশ্রয় গ্রহণ করে। কিন্তু চ্যানেল দিয়ে ছোট নৌকা প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা বুঝিয়ে দেয় সুনাক সরকার কতো রুঢ়।”
তার এই মন্তব্যের পরে বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি বলেন, প্রত্যেকের স্বাধীনতা রয়েছে। তবে স্যোশাল মিডিয়ায় কি বিষয়ে কথা বলা যাবে বা যাবে না সেটা নিয়ে একটা সম্মতিতে আসতে হবে লিনেকারকে। এছাড়া এই ঘটনার কারণে আমি পদত্যাগ করবো না। এটা আমার ব্যর্থতা নয়। অন্যান্য উপস্থাপকেরা কাজ করতে চায় নাই সেটাও তাদের স্বাধীনতা।
এই বিষয়ে ভিন্ন জন ভিন্ন মতামত দিয়েছেন। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন যে বিবিসি এবং ফুটবল উপস্থাপক গ্যারি লিনেকারের মধ্যে তার সরকারের অভিবাসন নীতির সমালোচনা নিয়ে বিরোধ বিবিসির বিষয়। তিনি আশা করেন, লিনেকার এবং বিবিসি তাদের মতভেদ সময়মতো সমাধান করতে পারবে।
লেবার পার্টি বিবিসির এই আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। তাদের মতে এটা প্রমাণ করে বিবিসি নিরপেক্ষ নয়। তারা টোরি সরকারের পক্ষে কাজ করে।
বিবিসিতে লিনেকারের স্থগিতাদেশের সমালোচকরা বলছেন যে তিনি তার ব্যক্তিগত মতামতের অধিকারী কারণ তিনি একজন সংবাদ উপস্থাপক নন। গ্রেগ ডাইক, যিনি ২০০০ থেকে ২০০৪ সালের পর্যন্ত বিবিসির মহাপরিচালক ছিলেন, শনিবারের শুরুতে বিবিসি রেডিওকে বলেছিলেন, বিবিসি লিনেকারকে চাপ প্রয়োগ করে ভুল করেছে কারণ এটি এমন ধারণা দেয় যে সরকার নির্ধারণ করে দেয় কি সম্প্রচার করা যাবে কিংবা যাবে না। এটা গণতন্ত্রের উপর কালিমা।