13.5 C
London
September 16, 2024
TV3 BANGLA
Uncategorized

বেশি দিন বাঁচার ১৩টি বৈজ্ঞানিক উপায় (পর্ব-২)

গত পর্বে বলেছিলাম, দীর্ঘায়ু লাভের ১৩টি বৈজ্ঞানিক উপায়ের কথা বলা হবে। কিন্তু বলেছি কেবল ৬টি উপায়ের কথা।

এবার জেনে নেয়া যাক বাকি ৭টি বৈজ্ঞানিক উপায় সম্পর্কে:

১. পরিমিত মদ্যপান

অ্যালকোহল সেবনের সঙ্গে লিভার, হার্ট এবং অগ্ন্যাশয়ের রোগের সম্পর্ক রয়েছে, পাশাপাশি এটি মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। অ্যালকোহলের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পণ্যটি নিষিদ্ধ। কিন্তু একদলের গবেষকের দাবি, পরিমিত মদ্যপান কয়েকটি রোগের পাশাপাশি আপনার অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিকে ১৭-১৮% হ্রাস করতে সাহায্য করে। তবে পণ্যটির ক্ষতিকর প্রভাবকে বিবেচনায় এনে এটিকে বর্জনের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্বের অনেক সংগঠন।

২. দীর্ঘ জীবনের জন্য হাসি-খুশি থাকুন

যারা যত হাসিখুশি জীবন যাপন করেন, তারা তত দীর্ঘদিন বাঁচেন।গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সুখী জীবনযাপন করেন তাদের অকাল মৃত্যুর হার অন্যান্যদের তুলনায় ৩.৭% কম।তাই দীর্ঘদিন বাঁচতে হলে জীবনকে উপভোগ করে হাসি খুশি জিবন যাপন করতে হবে।

৩. দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ এড়িয়ে চলুন

উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তা আপনার জীবনকালকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে পারে। উদ্বেগ এবং মানসিক চাপের কারণে নারীদের হৃদরোগ, স্ট্রোক বা ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়ে যায় আর পুরুষদের ক্ষেত্রে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি তিনগুণ বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা যায় যে হতাশাবাদী ব্যক্তিদের মধ্যে  আশাবাদী ব্যক্তিদের চেয়ে ৪২% বেশি অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। সুতরাং হাসিখুশি থাকার পাশাপাশি আশাবাদী মনোভাব আপনাকে উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখতে পারে। সেইসঙ্গে আপনাকে দিতে পারে দীর্ঘ রোগমুক্ত জীবন।

৪. সুস্থ্য সামাজিক বন্ধন

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধনের মাধ্যমে আপনি ৫0% পর্যন্ত দীর্ঘ জীবন লাভ করতে পারবেন। স্বাস্থ্যকর সামাজিক বন্ধন আপনার হৃদয়, মস্তিষ্ক, হরমোন এবং ইমিউন ফাংশনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে, যা আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে। একটি শক্তিশালী সামাজিক বন্ধন আপনাকে অবসাদ,হতাশা আর মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখতে পারে যা কিনা আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

৫. বিবেকবান হন

বিবেকবান বলতে বোঝায় শৃঙ্খলাবদ্ধ, সংগঠিত, দক্ষ এবং লক্ষ্য-ভিত্তিক হওয়ার ক্ষমতাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে বাচ্চারা, সংগঠিত এবং শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বেড়ে উঠেছে তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ১১% কম।বিবেকবান ব্যক্তিদের রক্তচাপ ও কম মানসিক রোগের পাশাপাশি ডায়াবেটিস এবং হার্ট বা জয়েন্ট সমস্যাগুলির ঝুঁকিও কম।বিবেকবান হলে দীর্ঘস্থায়ী জীবনযাপন করতে পারবেন এবং বৃদ্ধ বয়সে কম স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হবেন।

৬. কফি বা চা পান করুন

কফি এবং চা উভয়ই দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। উদাহরণ স্বরূপ, গ্রিন টিতে পাওয়া পলিফেনল দেহের ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। একইভাবে, কফি টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এবং নির্দিষ্ট ক্যান্সার এবং মস্তিষ্কের অসুস্থতার ঝুঁকি কমায়। যারা কফি এবং চা পানকরে তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ২০-৩০% কম থাকে। কিন্তু মনে রাখবেন, অত্যধিক ক্যাফিনও উদ্বেগ এবং অনিদ্রার কারণ হতে পারে, তাই প্রতিদিন ৪০০ মিলিগ্রাম (প্রায় ৪ কাপ) এর বেশি পান না করাই ভাল। পরিমিত চা এবং কফির ব্যবহার স্বাস্থ্যকর বার্ধক্য এবং দীর্ঘায়ুতে উপকার করতে পারে।

৭. নিয়মিত ঘুমানোর অভ্যাস

কোষের ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ এবং দেহকে নিরাময়ের জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, দীর্ঘায়ু লাভ নিয়মিত ঘুমের  সাথে যুক্ত। অতিরিক্তি ঘুম অথবা অল্প ঘুম দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্রতি রাতে ৫-৭ ঘণ্টার কম ঘুমানো অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ১২% বারিয়ে দেয়, আবার রাতে ৮-৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৮% বাড়িয়ে দেয়। খুব অল্প ঘুম ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং স্থূলত্বের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে আবার অতিরিক্ত ঘুম হতাশা বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম আপনাকে দীর্ঘদিন বাঁচতে সাহায্য করবে।

দীর্ঘায়ু আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলেই মনে হতে পারে তবে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস আপনাকে সুস্থভাবে দীর্ঘদিন বাঁচতে সাহায্য করতে পারে।

আগের পর্ব: দীর্ঘায়ু লাভের ১৩টি বৈজ্ঞানিক উপায়!


৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
সানজানা ফারিহা, টিভিথ্রি বাংলা

এনএইচটি

আরো পড়ুন

Health Advice – Dr. Mushabbir Hoosain Rubel & Dr. Monjur Showkat

যারা বঙ্গবন্ধুর লাশ সিড়িতে ফেলে সেদিন মন্ত্রী হবার প্রতিযোগীতায় ছিল। – Kazi Shamim Ahsan

Law with N Rahman, Solicitor Taj Uddin Shah and Nashit Rahman