যুক্তরাজ্যের রাস্তাঘাটে নারীরা এখনো নিরাপদ বোধ করেন না বলে উঠে এসেছে নতুন এক তদন্ত প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মার্চে ওয়েন কাজেন্স নামক লন্ডন পুলিশেরই এক অফিসার সারা এভারার্ড নামে এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন। ভয়াবহ এই ঘটনা গোটা ব্রিটেনকেই নাড়িয়ে দেয়। রাজপথে হয় ব্যাপক বিক্ষোভ।
কিন্তু চার বছর পার হয়ে গেলেও পরিস্থিতি এখনো খুব একটা বদলায়নি। সারা হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী দলের প্রধান স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত আইনজ্ঞ এলিশ অ্যাঞ্জিওলিনি সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, ‘ব্রিটেনে নারী-শিকারীরা এখনো খোলাখুলি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তরুণী ও নারীরা প্রকাশ্য রাস্তায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।’
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ঘটনার পর থেকে অসংখ্য নারী নানা ধরনের হামলার শিকার হয়েছেন।
এই প্রতিবেদনে ‘প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহে মৌলিক ব্যর্থতা এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে হামলা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি’ হাইলাইট করা হয়েছে।
অ্যাঞ্জিওলিনির রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ব্রিটেনে প্রকাশ্য স্থানে নারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই। এটি নিরাপত্তা নীতি ও পরিকল্পনায় বড় সমস্যা হিসেবে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ব্রিটেনের অনেক নারী যার মধ্যে ছাত্রী, কর্মজীবী, পুলিশ কর্মী রয়েছেন- তারা পাবলিক জায়গায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে সর্বদা সতর্ক থাকেন। নারীদের কাছে রাস্তা বা পাবলিক জায়গায় হয়রানি এতটাই সাধারণ হয়ে গেছে যে, তারা সাধারণত শুধু বড় ধরনের ঘটনারই রিপোর্ট দেন।
প্রতিবেদনের একটি অংশে জাতিসংঘের সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ব্রিটেনের ৭১ শতাংশ নারী বলেছেন, তাদের জীবনে অন্তত একবার পাবলিক প্লেসে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
প্রতিবেদনটি আরও উল্লেখ করেছে, ব্রিটেনের পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের একাধিক মামলার পুনরাবৃত্তি দেখা গেছে। এই তথ্য ব্রিটেনের ব্যর্থ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই নির্দেশ করে, যা নারীর বিরুদ্ধে হয়রানির সুযোগ তৈরি করে।
এদিকে, ব্রিটেনের কয়েকজন নারী সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, বাইরে বের হলে তারা সহজে দৌড়াতে পারেন এমন জুতো পরে বের হন এবং সবসময় ফোনে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন যাতে নিরাপদ বোধ হয়।
সামাজিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ব্রিটেনে নারী বিরোধী অপরাধ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় পুলিশ ও বিচার বিভাগীয় কাঠামোতে গুরুতর ও দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতা রয়েছে।
সূত্রঃ যুগান্তর
এম.কে

