সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ও তাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সশস্ত্র গোষ্ঠীর জোট। চীনের মধ্যস্থতায় দুই দফা আলোচনার পরও উভয় পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংশ্লিষ্ট সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি জানিয়েছে।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিগত তিন সশস্ত্র গোষ্ঠী—মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) গত ২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে চীনের কুনমিংয়ে জান্তাবাহিনীর সঙ্গে দুই দফায় বৈঠক করে।
চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন এই বৈঠকের মধ্যস্থতা করেছিলেন। বৈঠকে দুই পক্ষ শান রাজ্যে জান্তাবাহিনীর ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়া, মিয়ানমার-চীন বাণিজ্যিক রুট পুনরায় চালু করাসহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয় আলোচিত হয়। কিন্তু এসব ইস্যুতে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। উল্লেখ্য, মিয়ানমার-চীন বাণিজ্যিক রুটের নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে বিদ্রোহীদের দখলে।
এদিকে, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান রাজ্যের মোট ১০টি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহীদের যৌথ বাহিনী। গত ২৭ অক্টোবর থেকে আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) যৌথভাবে দেশটির জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো শুরু করে।
থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের সাংবাদিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন অনুসারে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মানতং শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় টিএনএলএ। এর মাধ্যমে দলটি উত্তর শান রাজ্যের পালাউং স্বশাসিত অঞ্চলের দখল সম্পন্ন করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন টিএনএলএ কর্মকর্তারা।
জাতিগত পালাউং বিদ্রোহী গোষ্ঠী টিএনএলএ মানতংয়ে অবস্থিত জান্তার ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ১৩০-কে বিতাড়িত করার পরে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর আগে টিএনএলএ ওই অঞ্চলে নামখান ও নামসান শহর থেকে সেনাবাহিনীকে বিতাড়িত করে। ২০০৮ সালে সংবিধান অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবেই নামসান ও মানতং শহর মিলে একটি অঞ্চল ঘোষণা করা হয়।
অপারেশন ১০২৭-এর অংশ হিসেবে টিএনএলএ ও যৌথ বাহিনী মানতং নিয়ন্ত্রণে নিতে লড়াই শুরু করে। মানতং শহরটি নামতু শহরের ঐতিহাসিক বাদিন খনি থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। পার্বত্য শহরটি স্বশাসিত কোকাংসংলগ্ন শেলি নদীর পূর্বে।
সূত্রঃ ইরাবতী
এম.কে
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩