যুক্তরাজ্য হতে উত্তর আয়ারল্যান্ডে হয়ে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করা সকল অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত দিতে চায় আয়ারল্যান্ড। যার জন্য যুক্তরাজ্য নিরাপদ দেশ হিসাবে একটি খসড়া আইনের আলোচনা শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। সেই খসড়া আইন আইরিশ সংসদে অনুমোদিত হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। এই আইন অনুমোদিত হবার ফলে যুক্তরাজ্য হতে প্রবেশ করা আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়া যেতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যানুযায়ী জানা যায়, আইরিশ সরকারের মন্ত্রীরা সম্মিলিতভাবে বিচারমন্ত্রী হেলেন ম্যাকেনি কর্তৃক মন্ত্রিসভায় আনা পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে বিচারমন্ত্রী হেলেন ম্যাকেনি দাবি করেছিলেন সাম্প্রতিক আশ্রয় দাবিগুলির ৮০% এরও বেশি দাবী যুক্তরাজ্য হতে আগত। যারা উত্তর আয়ারল্যান্ড হয়ে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করেছিলেন।
আইরিশ সরকার সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে রুয়ান্ডায় আশ্রয়প্রার্থীদের নির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্তের কারণেই শরণার্থীদের আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে আসতে উৎসাহিত করছে।
আইরিশ উপ -প্রধানমন্ত্রী মিশেল মার্টিন গত সপ্তাহে বলেন আশ্রয়প্রার্থীরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অভয়ারণ্য খুঁজছেন। রুয়ান্ডায় নির্বাসিত হওয়ার চেয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকেই সম্ভাবনার স্থান হিসাবে মনে করছেন আশ্রয়প্রার্থীরা।
তবে ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র আইরিশ এবং যুক্তরাজ্যের সরকারগুলির মধ্যে ব্রেক্সিট-পরবর্তী চুক্তির বিষয় উত্থাপন করেন।
১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র জানান, যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডের চুক্তিতে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রত্যাবর্তন গ্রহণ করার আইনী বাধ্যবাধকতা ছিল না।
মুখপাত্র আরও নিশ্চিত করেছেন যে “এই চুক্তি ব্যবস্থার অধীনে কোনও আশ্রয়প্রার্থীকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি”।
তারা যোগ করেন, “এটি যুক্তরাজ্যের সরকারের উপর নির্ভর করে তারা আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে নিবে কিনা।”
মঙ্গলবার ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট হতে প্রচারিত বিবৃতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়। যিনি ইতোমধ্যে বলেছিলেন তার সরকার আয়ারল্যান্ড থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের গ্রহণে “আগ্রহী” নয়।
যুক্তরাজ্য হতে আয়ারল্যান্ডে পালিয়ে আসা ভারতের ২২ বছর বয়সী একজন আশ্রয়প্রার্থী বিবিসিকে বলেন তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ড হয়ে আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে প্রবেশ করেছেন। তিনি আরো জানান যে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করার উদ্দেশ্যে তিনি এসেছিলেন তবে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া ব্রেক্সিটের পরে যুক্তরাজ্যের নিয়ম কঠোর হতে কঠোরতার দিকে এগিয়েছে।
উল্লেখ্য যে আইরিশ সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা মোকাবেলায় লড়াই করে চলছে।১,৪০০ জনেরও বেশি আশ্রয় আবেদনকারী বর্তমানে আবাসন ছাড়াই রয়েছেন। ফলস্বরূপ রাস্তায় সারি সারি গৃহহীন শরণার্থীদের লাইন ধরে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
০১ মে ২০২৪