3.4 C
London
January 19, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যের কেন্টে হোম অফিস অভিবাসী কর্তৃক আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে

যুক্তরাজ্যে কেন্টের ম্যানস্টনে আটককৃত আশ্রয়প্রার্থীরা হোম অফিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করেছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে হোম অফিস অভিবাসীদের অর্থায়িত আইনি প্রতিনিধিত্ব দিতে বাধ্য হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের প্রসেসিং সেন্টার হিসেবে কেন্টের একটি কেন্দ্র। এই সেন্টারের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যর্থতার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল যার তদন্তে আশ্রয়প্রার্থীরা অর্থায়িত আইনি প্রতিনিধিত্ব পাচ্ছেন।

ম্যানস্টন, রামসগেটের বাইরে একটি স্বল্প-মেয়াদী অভিবাসী আটক কেন্দ্র। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে এই কেন্দ্র চালু করা হয়। অতিরিক্ত অভিবাসী চ্যানেল পেরিয়ে আসার কারণে এই সেন্টার চালু করা হয়েছিল।

কিন্তু প্রথম বছরের ছয়মাস অতিক্রান্ত হবার পর কেন্দ্রটিতে বিশৃঙ্খলায় নেমে আসে। সে সময় মন্ত্রীদের বারবার এই কেন্দ্র নিয়ে সতর্কতা জানানো হয়। তবে ২০২২ সালের গ্রীষ্মের শেষ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সমস্যাগুলি অব্যাহত ছিল এবং পরে কেন্দ্রটি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়।

ম্যানস্টনের ১৬ জন আটককৃত অভিবাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার এই কেন্দ্রে কী ঘটেছিল তা নিয়ে তদন্তকে আইনি জনসমক্ষে বাধ্যতামূলক করেছিলেন। তাছাড়া সাক্ষ্যগ্রহণকারী একটি তদন্ত থেকে অবিচ্ছিন্ন তদন্তে নামিয়ে আনেন, যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অর্থায়িত আইনি প্রতিনিধিত্ব ছিল না।

তবে হাইকোর্টের শুনানির কয়েক দিন আগে, হোম অফিস তদন্তটি “আপগ্রেড” করতে সম্মত হয়।

এই সপ্তাহে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, হোম অফিস একটি স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করতে সম্মত হয়েছে, যা জনসমক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে দাবিদারদের জন্য অর্থায়িত আইনি প্রতিনিধিত্ব থাকবে। তদন্তের চেয়ারপারসন কে হবেন তা এখনও নিশ্চিত হয়নি বলে জানা যায়।

২০২২ সালের শরৎকালে ম্যানস্টনের অবস্থা সংকটময় হয়ে ওঠে, যখন ১,৬০০ জনের ধারণক্ষমতার স্থানে ৪,০০০ জন রাখা হয়েছিল এই কেন্দ্রে।

এই অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে ডিপথেরিয়া এবং স্কেবিস রোগ ছড়িয়ে পড়ে। আশ্রয়প্রার্থীদের নোংরা মেঝে ও কার্ডবোর্ডের বাক্সে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়। শৌচাগারগুলি মলমূত্র দ্বারা ছিল পরিপূর্ণ। নারী ও শিশুদের অপরিচিত পুরুষদের কাছাকাছি ঘুমাতে হয়েছিল। রক্ষীদের দ্বারা হামলার অভিযোগ উঠেছিল এই সময়ে।

২০২২ সালের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রক্রিয়াজাতকৃত অভিবাসীদের ২৯,০০০ জনের মধ্যে প্রায় ১৮,০০০ জনকে ২৪ ঘণ্টার সীমার বাইরেও আটকে রাখা হয়েছিল। সবচেয়ে দীর্ঘ আটককাল ছিল ৩২ দিন।

১৯ নভেম্বর, কুর্দি আশ্রয়প্রার্থী হুসেইন হাসিব আহমেদ ম্যানস্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা যান।

ম্যানস্টনে কী ভুল হয়েছিল তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য আশ্রয়প্রার্থী এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলির আহ্বান বারবার বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে।

২০২২ সালের নভেম্বর মাসে আশ্রয়প্রার্থীরা একটি সাধারণ তদন্তের আহ্বান জানায়। ২০২৪ সালের মার্চে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি সাধারণ তদন্তে সম্মত হন। তবে, কুপার দায়িত্ব নেওয়ার পর অবিচ্ছিন্ন তদন্তের সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে জনসাধারণের শুনানির প্রয়োজন ছিল না। ধারণা করা হয়, এটি খরচ বাঁচানোর জন্য করা হয়েছিল।

ডানকান লুইসের সলিসিটার লুইস কেট বলেন, “এই তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের হয়ে আসবে, যাতে ম্যানস্টনের সংকট পুনরাবৃত্তি এড়ানো যায় এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষা নেওয়া যায়।”

এক পৃথক আইনি প্রক্রিয়ায়, ম্যানস্টনে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় আটক থাকা ১০০ জনেরও বেশি প্রাক্তন বন্দী হোম অফিসের বিরুদ্ধে অবৈধ আটক করার অভিযোগ এনেছেন। এই দাবিগুলির নিষ্পত্তি করতে সরকারের কয়েক কোটি পাউন্ড খরচ হতে পারে।

হোম অফিস এই সপ্তাহের হাইকোর্টের আদেশ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও, সূত্র জানিয়েছে ম্যানস্টনে কী ভুল হয়েছিল তা নিয়ে অনুচ্ছেদ ৩ অনুসারে একটি মানবিক বা অবমাননাকর আচরণের তদন্ত পরিচালনার প্রতিশ্রুতি তারা দিয়ে রেখেছে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১৯ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

ব্রিটিশ অর্থনৈতিক গতিপথ শীঘ্রই পোল্যান্ড হতে পিছিয়ে পড়বে

নিউজ ডেস্ক

বরিস জনসনের স্থলাভিষিক্ত হবেন কে?

মর্গেজ রেট বৃদ্ধির সম্মুখীন ব্রিটেনের ৫ মিলিয়ন পরিবার