10.9 C
London
February 23, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার প্রয়োজনঃ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সংগঠন

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন, যার মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভোট গ্রহণ এবং ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা কমানো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, বলে জানিয়েছে দেশটির নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সংগঠন।

ডাকযোগে ভোট থেকে শুরু করে বাধ্যতামূলক পরিচয়পত্র (আইডি) ব্যবস্থার পরিবর্তনসহ একাধিক সংস্কার ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে এবং আরও পরিবর্তন আসন্ন। কিন্তু এটি মূলত “১৯ শতকের কাঠামোর উপর ২১ শতকের ভোটারদের প্রত্যাশা চাপিয়ে দেওয়ার মতো” হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ইলেক্টোরাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (AEA)।

নির্বাচনী ব্যবস্থা আধুনিকায়নের বিষয়ে প্রকাশিত “নিউ ব্লুপ্রিন্ট ফর আ মডার্ন ইলেক্টোরাল ল্যান্ডস্কেপ” শীর্ষক প্রতিবেদনে সংগঠনটি ডাকযোগে ভোটের আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে নির্বাচনী সময়সূচি পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে। তারা বলছে, বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতি টেকসই নয়।

বিশেষত, সাধারণ নির্বাচনের সময় ৩৮,০০০-রও বেশি ভোটকেন্দ্রে ১৫ ঘণ্টা ধরে ভোট গ্রহণ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত কর্মী খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন জটিলতা, যেমন ভোটারদের পরিচয়পত্র যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা।

বর্তমানে প্রতিটি ভোটার এলাকা (পোলিং ডিস্ট্রিক্ট)-তে আলাদা ভোটকেন্দ্র থাকা বাধ্যতামূলক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা কমিয়ে বড় কিছু ভোটকেন্দ্র (ভোটিং হাব) স্থাপন করা যেতে পারে, যা জনবহুল এলাকাগুলিতে, যেমন শপিং সেন্টারগুলোতে রাখা যেতে পারে।

এগুলোতে ভোটগ্রহণের সময়সীমা কিছুটা কমানো যেতে পারে, তবে ভোটাররা তাদের স্থানীয় কাউন্সিল এলাকার যেকোনো কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন। এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যে প্রচলিত বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যেটা বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশে সাধারণ নিয়ম। এর ফলে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত স্কুলগুলো বন্ধ করার দরকার পড়বে না।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে ডাকযোগে ভোটের সংখ্যা বাড়ছে, যা “নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি” হয়ে উঠেছে।

গত জুলাই মাসের সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রায় ১৩ লাখ নতুন ডাকযোগে ভোটের আবেদন জমা পড়েছিল, যা নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছিল। একইসঙ্গে তারা নতুন ভোটার নিবন্ধনও পরিচালনা করছিলেন।

সংগঠনটি ডাকযোগে ভোটের আবেদনের শেষ সময়সীমা নির্বাচনের ১১ কর্মদিবস থেকে ১৬ কর্মদিবস আগে করার প্রস্তাব দিয়েছে।

ভোটার পরিচয়পত্রের (আইডি) ক্ষেত্রে বর্তমানে অনুমোদিত নথির সীমিত তালিকা আরও সম্প্রসারিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—যা সরকারও বিবেচনা করছে। পাশাপাশি, ডিজিটাল আইডি ব্যবহারের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা যেতে পারে।

আরও বিস্তৃতভাবে, নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি রয়্যাল কমিশন বা অনুরূপ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যালোচনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

AEA-এর প্রধান নির্বাহী পিটার স্ট্যানিয়ন বলেন, ” সংস্কার ছাড়া বারবার পরিবর্তন আনার ফলে নির্বাচন পরিচালনা আগের চেয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে।”

তিনি আরও বলেন, “১৬ বছর বয়সীদের ভোটাধিকার যুক্তরাজ্যে শুরু হতে যাচ্ছে, এবং বিভিন্ন সংবিধানিক পরিবর্তন ঘটছে। আমরা ২১ শতকের ভোটার প্রত্যাশাগুলোকে ১৯ শতকের কাঠামোর উপর চাপিয়ে দিতে পারি না। প্রতিবার পরিবর্তন আনলে ব্যর্থতার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্য উচ্চ আদালতের রায়ঃ শিশু আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেলে রাখা বেআইনি

যুক্তরাজ্যে এয়ারবিএনবি-স্টাইলের বাড়ি ভাড়া বন্ধের চিন্তা করছে সরকার

অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য দুঃসংবাদ দিল যুক্তরাজ্য