যুক্তরাজ্যে কাজ ও পড়াশোনার জন্য ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ কমেছে।
হোম অফিসের তথ্য অনুযায়ী, কঠোর নতুন অভিবাসন নীতিমালা কার্যকর হওয়ার পর থেকে বিদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে কাজ বা পড়াশোনা করার জন্য প্রায় ৪ লাখ কম মানুষ ভিসার জন্য আবেদন করেছেন।
প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৫৪৭,০০০টি ভিসা আবেদন জমা পড়েছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের প্রায় অর্ধেক।
৩৯৫,১০০ বা ৪২ শতাংশ আবেদন কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো বিদেশি ছাত্র এবং বিদেশি স্বাস্থ্যকর্মীদের আবেদন সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়া।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্য ও সেবা খাতে কাজের ভিসার জন্য আবেদন সংখ্যা ২,৯৯,৮০০ থেকে ৬৩,৮০০-তে নেমে এসেছে, যা ৭৯ শতাংশ হ্রাস।
গত বছর, সাবেক কনজারভেটিভ সরকার যুক্তরাজ্যে রেকর্ড আইনি অভিবাসন কমাতে এবং বার্ষিক আগমন ৩ লাখ কমানোর চাপের মুখে বেশ কয়েকটি নতুন ভিসা সীমাবদ্ধতা চালু করেছিল।
এর মধ্যে ছিল মার্চ মাসে বিদেশি সেবা কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের আনার নিষেধাজ্ঞা এবং এপ্রিলে দক্ষ কর্মীদের জন্য বেতনসীমা £৩৮,৭০০ পর্যন্ত নির্ধারণ করা।
সামাজিক সেবা খাত এই নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল এবং এটি “নিষ্ঠুর” বলে অভিহিত করেছে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আগামী সপ্তাহে ব্রিটেনের “আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট অপরচুনিটি একশন প্ল্যান” উন্মোচন করতে যাচ্ছেন। যেখানে এ.আই দ্বারা দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য দ্রুতগতির ভিসা প্রক্রিয়ার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ম্যাট ক্লিফোর্ডের রচিত এই প্রস্তাবনা যুক্তরাজ্যের এ.আই খাতকে উন্নত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
শিল্প প্রধানদের উদ্বেগের বিষয় ছিল বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মীদের নিয়োগের দীর্ঘ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এবং খরচ। এই পরিকল্পনায় ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বলেও জানা যায়।
সম্প্রতি ভিসা সংস্কারের ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারকে যুক্তরাজ্যে আনতে পারছে না। এ ছাড়া নিম্ন আয়ের ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য বিদেশি স্বামী বা স্ত্রী আনা কঠিন হয়ে গেছে।
পূর্বের নীতিগত পরিবর্তনের ফলে সতর্ক করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেবা শিল্পখাতকে। এই পরিবর্তনের ফলে সমস্যায় পড়তে পারে এই দুইখাত বলে জানিয়েছিল ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলেছে, অভ্যন্তরীণ টিউশন ফি বৃদ্ধি স্থগিত থাকা এবং নীতিগত পরিবর্তনের পর বিদেশি ছাত্রসংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় তাদের আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে দক্ষ কর্মীদের ভিসার জন্য প্রধান আবেদনকারী এবং তাদের নির্ভরশীলদের ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা হয়েছিল ৯৬,৬০০ টি। ২০২৪ সালে আবেদনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৯৩,৮০০ টি।
তবুও এই আবেদনের সংখ্যা ২০২২ সালে ছিল ৯২,৩০০ টি।
সূত্রঃ দ্য স্ট্যান্ডার্ড
এম.কে
১০ জানুয়ারি ২০২৫