TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে ইসলামোফোবিয়াঃ ইসলামের সমালোচনাকে সুরক্ষা দিল ব্রিটিশ আদালত

ব্রিটেনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে এক অভাবনীয় রায়ের পর। একটি এমপ্লয়মেন্ট ট্রাইব্যুনালে বিচারক ঘোষণা দিয়েছেন যে ইসলাম সমালোচনামূলক মত এখন থেকে Equality Act 2010-এর অধীনে একটি “protected belief” বা সুরক্ষিত বিশ্বাস হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই মামলার মূল ব্যক্তি ছিলেন প্যাট্রিক লি নামের এক অ্যাকচুয়ারি, যিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলাম নিয়ে কিছু মন্তব্য করার কারণে Institute and Faculty of Actuaries (IFoA) থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। লির এক পোস্টে তিনি নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে “একজন দানব” বলে উল্লেখ করেন, যা প্রতিষ্ঠানটি “আপত্তিকর ও উসকানিমূলক” বলে রায় দেয়। IFoA অভিযোগ করে, তার পোস্টগুলো মুসলমানদের হেয় করার উদ্দেশ্যে তৈরি। তবে লি তা অস্বীকার করে জানান, তার উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় মতবাদ সমালোচনা করা, ব্যক্তিগতভাবে কাউকে আঘাত করা নয়।

বিচারক ডেভিড খান তার রায়ে বলেন, ইসলাম-বিরোধী বা ইসলাম সমালোচনামূলক মতামতও গণতান্ত্রিক সমাজে সম্মানযোগ্য, এবং আইনের চোখে সুরক্ষিত। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২১ সালে মায়া ফরস্টাটার মামলার রায়ের পর এটি দ্বিতীয়বারের মতো এমন সিদ্ধান্ত, যেখানে একটি বিতর্কিত বিশ্বাসকেও আইনগতভাবে রক্ষা করা হলো।

এই রায়ের ফলে যুক্তরাজ্যে ধর্মীয় সমালোচনার সীমা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একদিকে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে জোরদার করছে, অন্যদিকে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা ও সামাজিক সম্প্রীতির ভারসাম্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে।

অন্যদিকে, লেবার সরকারের অধীনে গঠিত একটি প্যানেল এখনো কাজ করছে “ইসলামোফোবিয়া”-র নতুন সংজ্ঞা তৈরিতে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই সংজ্ঞা ইসলামের জন্য এমন এক বিশেষ আইনি সুরক্ষা সৃষ্টি করবে, যা অন্য ধর্মগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

তবে এখনো লি মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। Equality Act 2010-এর ব্যাখ্যা নিয়ে আরও বিচার প্রক্রিয়া বাকি আছে। তবু অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এই রায় এক নতুন দৃষ্টান্ত— যেখানে ধর্ম নয়, ব্যক্তির মত প্রকাশের অধিকার-ই শেষ পর্যন্ত মুখ্য হয়ে উঠেছে।

সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে আলোচনায় অগ্রগতি না থাকায় রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

যুক্তরাজ্যে এমপিদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভে ছয় মাস জেলঃ নতুন আইনে প্রতিবাদের অধিকার নিয়ে বিতর্ক

কোন পরীক্ষা ছাড়াই বিদেশী দন্ত চিকিৎসক নিবে যুক্তরাজ্য