ইংল্যান্ডে এখন থেকে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সহজেই ‘সিকনোট’ নেওয়ার দিন শেষ হতে চলেছে। সরকারের নতুন পরীক্ষামূলক নীতিমালায় চিকিৎসকদের আর সরাসরি ‘কাজের অযোগ্য’ ঘোষণার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। বরং, রোগীদের পাঠানো হবে থেরাপি, সামাজিক প্রেসক্রিপশন বা কর্মসংস্থান কোচের কাছে।
স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং (Wes Streeting) বলেছেন, “বর্তমান সিস্টেমটি ব্যর্থ — এটি রোগীদেরও সাহায্য করছে না, আবার দেশের ইকনমি (economy) থেকেও মানুষকে দূরে রাখছে।” তিনি জানান, নতুন এই পাইলট স্কিমের আওতায় ১৫টি এলাকায় চিকিৎসকদের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ থাকবে, যার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সহায়তা দলের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
বর্তমানে প্রতি বছর ১ কোটি ১০ লাখ ফিটনোট (fit note) ইস্যু করা হয়, যার ৯৩ শতাংশে লেখা থাকে রোগী কাজের জন্য ‘অযোগ্য’। স্বাস্থ্যসচিবের মতে, এটি কোনও চিকিৎসা সেবা নয়, বরং এটি আমলাতান্ত্রিক অচলাবস্থা। তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের মূল কাজ রোগীদের কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনার পথে সহায়তা করা, শুধু ছুটি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করা নয়।”
নতুন ব্যবস্থায় বিষণ্ণতা বা মানসিক অসুস্থতায় ভোগা কেউ চাকরির সময়সূচিতে নমনীয়তা পাওয়ার মতো সহায়তা পাবেন। অন্যদিকে, শারীরিক আঘাতে ভোগা রোগীদের দেওয়া হবে ফিজিওথেরাপি (physiotherapy), স্রেফ ছুটি নয়।
এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইউনিভার্সাল ক্রেডিট (Universal Credit) বিল পাশ হয়েছে। এতে ভবিষ্যতের কাজহীন নাগরিকদের জন্য ভাতা কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিলটি হাউস অব কমন্সে (House of Commons) ৯৪ ভোটের ব্যবধানে পাস হয়।
এনএইচএস (NHS) টকিং থেরাপিস প্রোগ্রামের মাধ্যমে গত বছর ৬৭,৭৯৪ জন কর্মসংস্থান সংক্রান্ত পরামর্শ গ্রহণ করেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৬২ শতাংশ বেশি। এই কর্মসূচির অধীনে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সিভি (CV) প্রস্তুতি, ইন্টারভিউ (interview) ট্রেইনিং এবং কাজের পরিবেশে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের মতো সহায়তা দেওয়া হয়।
সরকারের মতে, এটি শুধুমাত্র অসুস্থদের কর্মজীবনে ফেরানোর একটি পদক্ষেপ নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা ফিরিয়ে আনার একটি জরুরি উদ্যোগ।
সূত্রঃ মিরর
এম.কে
১২ জুলাই ২০২৫