যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বর্তমান ভিসাধারীদের জন্য বড় এক স্বস্তির খবর এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা (USCIS) স্পষ্ট করে জানিয়েছে, যেসব আন্তর্জাতিক কলেজ স্নাতক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এবং যারা এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করছেন, তাদের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী প্রযোজ্য ১ লাখ ডলারের অতিরিক্ত ফি আরোপ হবে না।
২০২৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ থেকে একটি বিতর্কিত ঘোষণায় জানানো হয়, নতুন এইচ-১বি ভিসার আবেদনের জন্য ১ লাখ ডলারের একটি অতিরিক্ত ফি দিতে হবে। এই সিদ্ধান্তে মার্কিন নিয়োগকর্তা ও ভিসাধারীদের মধ্যে ব্যাপক বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ২০ অক্টোবর USCIS-এর প্রকাশিত দিকনির্দেশনায় বলা হয়েছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রে থেকেই ভিসার স্ট্যাটাস পরিবর্তন করছেন (যেমন—F-1 স্টুডেন্ট ভিসা থেকে H-1B তে পরিবর্তন), তাদের এই ফি দিতে হবে না। একইসাথে, যেসব ব্যক্তি ভিসা নবায়নের জন্য আবেদন করছেন, তারাও এই ফি থেকে অব্যাহতি পাবেন।
USCIS জানিয়েছে, যেসব আবেদনকারী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে রয়েছেন এবং ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর পরে নতুন করে এইচ-১বি ভিসার আবেদন করছেন, শুধুমাত্র তাদের ক্ষেত্রেই এই ফি প্রযোজ্য হবে।
এছাড়াও যারা ‘কনসুলার প্রসেসিং’ (যার মাধ্যমে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে না থেকে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন), ‘পোর্ট অফ এন্ট্রি’ বা ‘প্রি-ফ্লাইট ইন্সপেকশন’ চাচ্ছেন, তারাও এই ফি-এর আওতায় পড়বেন।
এই নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত F-1 স্টুডেন্ট ও L-1 কর্মীরা এই অতিরিক্ত ফি থেকে মুক্ত থাকবেন। ফলে হাজার হাজার ভারতীয় ছাত্র ও প্রযুক্তি খাতে কর্মরতদের জন্য এটি একটি বড় স্বস্তির খবর।
F-1 ভিসা হলো যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য নির্ধারিত ছাত্র ভিসা এবং L-1 হলো এমন একটি ভিসা যার মাধ্যমে কোনো বহুজাতিক সংস্থা তাদের বিদেশি অফিস থেকে কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, কোনো পদের জন্য যদি মার্কিন নাগরিক পাওয়া না যায় এবং সেটি ‘ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট’-এর আওতায় পড়ে, তাহলে নিয়োগকর্তারা ব্যতিক্রম চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। তবে এই ধরনের ছাড় দেওয়ার বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট কোনো পেশা বা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি।
সংক্ষেপে মূল বিষয়গুলো:
– যারা যুক্তরাষ্ট্রে থেকেই F-1 থেকে H-1B-তে পরিবর্তন করছেন, তাদের ১ লাখ ডলারের ফি দিতে হবে না।
– ভিসা নবায়ন বা স্টেটাস এক্সটেনশনের ক্ষেত্রেও এই ফি প্রযোজ্য নয়।
– যারা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অবস্থান করছেন এবং নতুন করে আবেদন করছেন, শুধুমাত্র তাদের জন্যই ফি প্রযোজ্য।
– ভারতীয় ছাত্র ও প্রযুক্তি খাতের পেশাজীবীদের জন্য এটি একটি বড় স্বস্তি।
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন সংক্রান্ত অন্যতম কড়া সিদ্ধান্ত হলেও, USCIS-এর এই ব্যাখ্যার ফলে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী এখন ভিসা প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারছেন।
সূত্রঃ ইউএসসিআইএস
এম.কে