যুক্তরাজ্যের ১৯ বছর বয়সী রয়্যাল আর্টিলারি গানার জেসলি বেককে, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ সালে উইল্টশায়ারের লার্কহিল ক্যাম্পে তার কক্ষে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
একজন ময়নাতদন্তকারী জানান, ব্রিটিশ সেনাবাহিনী জেসলি বেকের যৌন হয়রানির অভিযোগ সঠিকভাবে তদন্ত করতে ব্যর্থ হওয়ায়। এটাই তার মৃত্যুর মূল কারণ।
তদন্তে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে লেখা হয়, “দীর্ঘ সময় ধরে হয়রানি, সম্পর্কজনিত সমস্যাগুলোর কারণে সৃষ্ট মানসিক চাপে” জেসলি বেক আত্মহত্যা করেন।
জেসলি বেক তার পরিবারের কাছে মৃত্যুর আগে অভিযোগ করেছিলেন, কয়েক মাস ধরে তার লাইন ম্যানেজার রায়ান ম্যাসন তাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বার্তা পাঠাচ্ছিলেন।
তদন্তে জানা যায়, ম্যাসন “জেসলির প্রতি অনুভূতি” নিয়ে ১৪-পৃষ্ঠার একটি নথি লিখেছিলেন এবং এক কর্মসফরের সময় তারা পাশাপাশি কক্ষ বুক করেছিলেন।
উইল্টশায়ার পুলিশ তদন্তে জানায়, মি. ম্যাসনের বিরুদ্ধে জেসলির উপর হয়রানির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মি. মেসন বর্তমানে একজন ড্রাইভিং প্রশিক্ষক বলে জানা যায়।
তাছাড়া জেসলি বেক আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন, তৎকালীন ৩৯ বছর বয়সী ব্যাটারি সার্জেন্ট মেজর মাইকেল ওয়েবারের নামে। মাইকেল ওয়েবার তাকে চেপে ধরে জোর করে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন একবার। যা জুলাই ২০২১ সালে একটি টিম-বিল্ডিং ইভেন্টের সময় ঘটেছিল।
তদন্তে জানা যায়, ১৬ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া জেসলি বেক এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন যে, সে রাতে তিনি নিজের গাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন।
মি. ওয়েবারকে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য “ছোটখাটো শাস্তি” দেওয়া হয় এবং তাকে একটি দুঃখপ্রকাশের চিঠি লিখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে ওয়ারেন্ট অফিসার-২ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
ময়নাতদন্তকারী নিকোলাস রাইনবার্গ বলেন, সেনাবাহিনীর উচিত ছিল জেসলি বেকের অভিযোগ পুলিশকে জানানো। কিন্তু তারা এটিকে “সাধারণ প্রশাসনিক পদক্ষেপ” হিসেবে গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, এই ব্যর্থতা জেসলি বেকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে “ন্যূনতমের চেয়েও বেশি” কারণ হিসেবে কাজ করেছে।
পুলিশ জানায়, জেসলি বেকের মৃত্যুর পেছনে তৃতীয় কোনো পক্ষ জড়িত ছিল না।
ময়নাতদন্তকারী অফিসার জানান, মৃত্যুর সময় জেসলির রক্তে মদ্যপানের মাত্রা তিনগুণ বেশি থাকলেও, তিনি নিশ্চিত যে জেসলি আত্মহত্যা করেছেন।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫