যুক্তরাজ্যের রুয়ান্ডা নীতি নতুন নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়কে নিয়ে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় আইন বহির্ভূত বিষয়কে আশকারা দিয়েছে। তিনি এখনও রুয়ান্ডা নির্বাসন পরিকল্পনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং প্রয়োজনে যুক্তরাজ্যের আইন পরিবর্তন করা হবে।
ঋষি সুনাক পিএমকিউএসকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণায় তিনি নতুন করে পরিকল্পনা করবেন, প্রয়োজনে নতুন চুক্তি সাক্ষর করবেন রুয়ান্ডার সাথে। প্রয়োজনে আইনী কাঠামোগুলি পুনর্বিবেচনার জন্যও তিনি প্রস্তুত। ব্রিটিশ জনগণ আশা করে চ্যানেল দিয়ে ছোট নৌকায় আসা অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করবে কনজার্ভেটিভ সরকার। জনগণের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে তিনি পেছাবেন না।
সুপ্রিম কোর্টের সভাপতি লর্ড রিডের মতে, রুয়ান্ডা নীতি নিয়ে যে আইন করতে চায় সরকার তা কখনও বাস্তবসম্মত নয়। বরং এই আইনে অনেক নিষ্ঠুরতা আছে এবং আশ্রয়প্রার্থীদের নিরাপত্তার প্রশ্নও এতে জড়িত।
দাতব্য সংস্থা কেয়ার ফোর ক্যালাইস জানায়, সুপ্রিম কোর্টের দেয়া এই রায়ের অর্থ হচ্ছে মানবতার বিজয়। সংস্থাটি জানায় প্রায় এক হাজার অভিবাসীকে রুয়ান্ডাতে নির্বাসিত করার কথা বলা হয়েছিল কিন্তু কেয়ার ফোর ক্যালাইস আশ্রয়প্রার্থীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা, সহমর্মিতা প্রদর্শন করে গিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই রায়ের পরে এখন প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী নির্বাচনের আগে কিভাবে ছোট নৌকায় অবৈধ ক্রসিং বন্ধ করবেন সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল বিষয়। বুধবার বিকেলে সুপ্রিমকোর্টের দেয়া রায়কে কেন্দ্র করে একটি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন ঋষি সুনাক। যেখানে তিনি এই রায় মোকাবেলায় নতুন প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেছেন।
ডোভারের স্থানীয় টরি এমপি নাটালি এলফিক বলেছেন, ফ্রান্সের সাথে চুক্তিই এখন ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ছোট নৌকাগুলি থামানোর একমাত্র উপায় হতে পারে।
তবে টরি পার্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান লি অ্যান্ডারসন রায়ের ব্যাপারে মতামত দিয়ে বলেছেন, সরকারের উচিত আইনগুলি উপেক্ষা করা এবং অবৈধ অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর দিনই তাদের নিজ দেশে ফেরত দেয়া। তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে “ব্রিটিশ জনগণের জন্য একটি অন্ধকারময় দিন” -হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
রুয়ান্ডান সরকার বলেছে, রুয়ান্ডা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ তৃতীয় দেশ নয় বলা এই রায়টির সাথে তারা একমত নন। রুয়ান্ডার সরকারের মুখপাত্র ইওলান্দে মাকোলো বলেছেন, “আমরা আমাদের মানবিক দায়িত্বকে গুরুত্ব সহকারে নিই এবং নিজেদের কর্তব্য পালনে অবশ্যই নিষ্ঠাবান।”
উল্লেখ্য যে, গত বছরের এপ্রিলে বরিস জনসনের সরকার এই রুয়ান্ডা নীতি প্রথম আলোচনায় নিয়ে আসে যা পরবর্তীতে ঋষি সুনাক এন্টি লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নীতি হিসেবে গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে রুয়ান্ডা সরকারের সাথে ১৪০ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যদিও ১৮ মাস ধরে একাধিক আইনী চ্যালেঞ্জের কারণে রুয়ান্ডায় কাউকে নির্বাসন পাঠানো সম্ভব হয়নি।
এম.কে
১৫ নভেম্বর ২০২৩