TV3 BANGLA
বাংলাদেশযুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

লন্ডনে বাংলাদেশ ভবন ক্রয় ঘিরে ধূম্রজাল, প্রশ্নের তীরে বিদ্ধ সাইদা মুনা

ব্রিটিশ বাংলাদেশী সম্প্রদায় দীর্ঘকাল ধরে লন্ডনের মাইল এন্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ ভবন বিক্রি সম্পর্কে স্বচ্ছতার দাবি করে আসছে। মাইল এন্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ ভবনটি ২০০৪ সালে চার লাখ বিশ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করা হয় বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়। ভবনটি বিক্রির পর থেকে, যুক্তরাজ্যে অসংখ্য বাংলাদেশী হাই কমিশনাররা পদে এসেছেন এবং চলে গিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের শেষ সময়ে পদে থাকা বাংলাদেশী হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমসহ অন্যান্য সকল হাইকমিশনার বিক্রয়লব্ধ তহবিলের অর্থ নিয়ে অসঙ্গতিপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করে আসছেন।

প্রাথমিকভাবে, ব্রিটিশ বাংলাদেশী সম্প্রদায়কে জানানো হয় ভবন বিক্রির অর্থটি ট্রেজারি শাখায় জমা করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে লন্ডন শহরে বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জন্য একটি নতুন সম্পত্তি কেনার জন্য ব্যবহৃত হবে। এই তথ্য প্রদান করা সত্ত্বেও কোনও সুস্পষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এবং তহবিলের অবস্থান সম্পর্কে ধারণাও স্পষ্ট করা হয়নি সংশ্লিষ্টদের পক্ষ হতে।

এই অমীমাংসিত ইস্যুটি ব্রিটিশ বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। উত্তর লন্ডনের হাইবারি হিলের মূল বাংলাদেশ ভবনটি ১৯৭২ সালে ব্রিটিশ বাংলাদেশি এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের কেন্দ্র হিসাবে বাংলাদেশের তৎকালীন সরকারকে উপহার দেওয়া হয়েছিল বলে তথ্যমতে জানা যায়।

হাইবারি হিলের ভবনটি দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণের কারণে আইলিংটন কাউন্সিল ভাঙ্গার জন্য আইনী নোটিশ জারি করে। যে কারণে তৎকালীন বাংলাদেশ হাইকমিশন ভবনটি বিক্রি করে ফেলার উদ্যোগ নেয় এবং আরও একটি সম্পত্তি কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। তবে নতুন কোনো প্রপার্টি বা সম্পত্তি কেনা হয়েছে বলে ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটিকে কখনও জানানো হয় নাই। এমন কি পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত থাকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ হতে।

এই সকল বিষয় নিয়ে সদ্য দায়িত্ব হতে অব্যাহতি পাওয়া বাংলাদেশী হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেন লন্ডনের বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক। তিনি তার চিঠিতে ভবন ক্রয়ের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান। ২০২০ সালের ২০ শে জানুয়ারী, তৎকালীন হাই কমিশনের প্রেস সেক্রেটারি আশিকুন নবী জনমত সম্পাদকের চিঠির উত্তরে নিশ্চিত করেন ভবন ক্রয় করার জন্য তহবিল একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে। তাছাড়া আরো জানানো হয়, সাইদা মুনা তাসনিম সাংস্কৃতিক ভবন কেনার জন্য কাজ করছেন। তবে সাইদা মুনা তাসনিমের ছয় বছরের মেয়াদকালে তার দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায় নাই। এমন কি ভবন ক্রয়ের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানা যায়।

বর্তমানে সাইদা মুনা তাসনিম তার পদ ছাড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাই ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রশ্ন এই তহবিল বর্তমানে কার অধীনে রয়েছে। কিংবা কোন অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা রাখা হয়েছে? ব্রিটিশ বাংলাদেশী সম্প্রদায় বিশ্বাস করে সাইদা মুনা যুক্তরাজ্য হতে চলে যাওয়ার আগে এই সকল বিষয়ের উত্তর বাংলাদেশী সম্প্রদায়কে জানানো উচিত।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) লন্ডন হাই কমিশনে কাজ করা তিন প্রাক্তন কূটনীতিক এবং কর্মকর্তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে। যা ইঙ্গিত দেয় যে এই সকল বিষয়ে জবাবদিহিতা প্রায় আসন্ন। বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের দাবি দূতাবাসে নিয়োগকৃত অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিষয়েও তদন্ত হওয়া উচিত।

সূত্রঃ সাপ্তাহিক জনমত

এম.কে
১৩ অক্টোবর ২০২৪

আরো পড়ুন

ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে সিলেটের আরেক যুবক নিহত

সীমান্ত থেকে দেশের ভেতরে ১০ মাইল বিজিবি সম্পত্তি ঘোষণার পরামর্শ

জাদুঘরে রাখা নিজের হার্ট দেখতে গেলেন ব্রিটিশ নারী