টিভিথ্রি ডেস্ক: শুক্রগ্রহের মেঘে ভাসমান প্রাণের সম্ভাব্য অস্তিত্বের ইঙ্গিত পেয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে এমন কিছু উপাদান পাওয়া গেছে যা কিনা প্রাণের অস্তিত্বের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বিবিসি প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুক্রের বায়মণ্ডলে পাওয়া সেই উপাদানটির নাম ফসফিন। একটি ফসফরাস ও তিনটি হাইড্রোজেনের পরমাণু মিলে সৃষ্টি হয় এই ফসফিন অণু।
পৃথিবীতে এই ফসফিনের সঙ্গে প্রাণ ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। এর প্রধান উৎস হচ্ছে অণুজীব, যা সাধারণত পেঙ্গুইনের দেহে এবং জলাভূমির মতো অক্সিজেন সমৃদ্ধ এলাকায় দেখা যায়।
জানা যায়, এই ফসফিন কারখানাতেও উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, শুক্রগ্রহে কারখানাও নেই, আবার পেঙ্গুইনও নেই। তবে কিভাবে গ্রহটির পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উপরে তা এলো? আর যে পরিমাণ ফসফিন সনাক্ত হয়েছে, বিজ্ঞানীদের মতে তার একমাত্র ব্যাখ্যা হতে পারে যে গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে।
শুক্রগ্রহ নিয়ে যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির গবেষক জেন গ্রিভস ও তার দলের একটি পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করে ন্যাচার অ্যাস্ট্রোনমি। সেখানেই দাবি করা হয় এই ফসফিনের উপস্থিতি।
এটিকে তারা বলছেন ‘বায়োসিগনেচার’, অর্থাৎ জীবনের স্বাক্ষর। ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা যেসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন, তার অন্যতম হলো এই ফসফিনের পরিমাণ।
সংবাদমাধ্যমকে জেন গ্রিভস বলেন, আমি পুরো ক্যারিয়ার ভীনগ্রহে প্রাণের সন্ধান করে কাটিয়েছি, কিন্তু কখনো ভাবিনি এই সৌরজগতেই এর সম্ভাবনা থাকতে পারে। তবে হ্যা, এই গবেষণায় কোনো বিষয় মিস করে যাচ্ছি কিনা তা যাচাই করার জন্য সবার সহায়তা দরকার। আমাদের গবেষণার সব তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত। বিজ্ঞান এভাবেই কাজ করে।
শুক্রগ্রহের পৃষ্ঠ হলো উষ্ণ এবং অম্লীয়, অর্থাৎ অ্যাসিডের আধিক্য রয়েছে। ফলে মাটিতে প্রাণের বিকাশ কঠিন। তবে এর মেঘের পরিবেশ কিছুটা অনুকূল। আর ফসফিনের সন্ধান পাওয়া গেছে সেখানেই। তবে সেখানকার মেঘমণ্ডল এতটাই অম্লীয় যে দ্রুতই সেই ফসফিনকে ধ্বংস করে ফেলার কথা। তবুও সেখানে ফসফিন গ্যাস উৎপন্ন হওয়া প্রাণের অস্তিত্ব থাকারই প্রমাণ, এমনটাই দাবি গবেষকদের।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
এনএইচটি