TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

সংবিধান বদলে যাবে?—জুলাই সনদের ৩০ প্রস্তাবসহ চার ইস্যুতে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত

রাষ্ট্রীয় সনদে ঐকমত্য করা চারটি কেন্দ্রীয় সংস্কার — তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন, দুইকক্ষী সংসদ গঠন ও উচ্চকক্ষে ১০০ জন গণনির্ধারিত সদস্য, জুলাই সনদের সম্মত ৩০টি প্রস্তাবের বাধ্যতামূলক বাস্তবায়ন, এবং অন্যান্য রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অধীন সংস্কার — আসন্ন নির্বাচন-দিবসে গণভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পরিণত হবে। সরকার ঘোষণায় বলা হয়েছে, নির্বাচন-ও গণভোট একসাথে অনুষ্ঠিত হবে যাতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন সরাসরি নিশ্চিত করা যায়।

প্রথম ইস্যু অনুযায়ী নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে। এর লক্ষ্য বলা হচ্ছে—ভোটের বিশ্বস্ততা ও কমিশনের স্বাধীনতা পুনরায় প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনকে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য করা। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যবস্থায় নিয়োগ-প্রক্রিয়া ও নিয়ন্ত্রক কাঠামোয় স্বচ্ছতা আনাই প্রধান উদ্দেশ্য।

দ্বিতীয় ইস্যুতে বর্তমান এককক্ষী সংসদকে বদলে দুইকক্ষী ব্যবস্থা আনা হচ্ছে; ইতিবাচক ভোট শুরুর ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচনের ফলের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হবে—এতে জাতীয় সিদ্ধান্তগুলোর স্থিতিশীলতা ও সংবিধান সংরক্ষণের অতিরিক্ত স্তর যোগ হবে বলে দাবি করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি রাজনৈতিক ভারসাম্য নিশ্চিত করতে পারে; আবার কেউ বলছেন এটি সিদ্ধান্তপ্রক্রিয়ায় জটিলতা বাড়াতে পারে।

তৃতীয় ইস্যুতে বলা হয়েছে—জুলাই সনদে যে ৩০টি প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নিয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে। এসব প্রস্তাবে রয়েছে সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা ও ক্ষমতা সংশ্লেষ, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদারসহ স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আইনি, প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

চতুর্থ ইস্যুতে অন্যান্য সংস্কারগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতির অনুপাতে বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে—অর্থাৎ শুধুমাত্র নির্বাচনী ফল নয়, প্রতিশ্রুতি-অনুগত বাস্তবায়নও গণতান্ত্রিক মান নিশ্চিত করবে বলে বলা হচ্ছে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা জোর দিয়ে বলেন, এই সংহত সংস্কারগুলো দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও প্রশাসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনবে এবং ভবিষ্যৎ মহলকে সংবিধান সম্মতভাবে কাজ করতে বাধ্য করবে।

বিশ্বসাম্য, রাজনীতি ও আইনের বিশেষজ্ঞরা এসব প্রস্তাবের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন—কেউ এগুলোকে গণতন্ত্রকে শক্ত করবে বলে সমর্থন জানাচ্ছেন, আবার অনেকে পরিষ্কার কাঠামো না থাকলে বাস্তবায়নে ঝুঁকি ও সাংবিধানিক বিবাদ বাড়বে বলে সতর্ক করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—গনভোটের ফল জনগণের চূড়ান্ত ইচ্ছা হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং ফল অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নির্বাচন-ও গণভোটের সুষ্ঠু আয়োজন, বহুদলীয় পর্যবেক্ষণ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান রাজনৈতিক সূত্র। আগামী নির্বাচনের দিন দেশবাসী একই সঙ্গে নতুন সংবিধানগত সিদ্ধান্তগুলোতে তাদের মূল্যবান মত প্রদান করবে—এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক জীবনচক্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

এম.কে

আরো পড়ুন

সই জালিয়াতি করে বোনকে সম্পত্তি দিতে চেয়েছিলেন টিউলিপ, অভিযোগ দুদকের

মেট্রোরেলে যেসব জিনিস বহন নিষিদ্ধ

নিউজ ডেস্ক

সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ আটক