ব্রিটেনের কারাগার ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে নতুন ভিসা নীতির কারণে। গোপন সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে প্রায় ২,৬০০ বিদেশি কারা কর্মকর্তা বর্তমানে রাইট-টু-ওয়ার্ক ভিসায় কাজ করছেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যাদের আয় £৪১,৭০০ পাউন্ডের নিচে, তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হলে দেশ ছাড়তে হতে পারে। এর ফলে একে একে প্রায় এক-চতুর্থাংশ কারাগার কর্মী নির্বাসনের মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হিজ ম্যাজেস্টি’স প্রিজন অ্যান্ড প্রোবেশন সার্ভিস (HMPPS)-এর সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিতে থাকা ২,৬০০ কর্মীর মধ্যে প্রায় ২,২০০ জনই কারারক্ষী এবং বাকিরা প্রশাসনিক ও সহায়ক পদে রয়েছেন। কারারক্ষীদের প্রারম্ভিক বেতন £৩৩,৭৫০ থেকে £৪৪,৫০০ পর্যন্ত হলেও কেবল লন্ডনে দীর্ঘ সময় কাজ করা কর্মীরাই সর্বোচ্চ সীমার বেতন পান।
ইতিমধ্যে কারাগারগুলো চরম চাপে রয়েছে — সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভুলবশত বন্দি মুক্তির ঘটনা, তহবিল ঘাটতি, ও ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দি থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
প্রিজন অফিসার্স’ অ্যাসোসিয়েশনের (POA) চেয়ারম্যান মার্ক ফেয়ারহার্স্ট জানান, সরকারের ধারণার চেয়েও বেশি সংখ্যক কর্মী এই নিয়মের আওতায় পড়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা এত সংখ্যক ফ্রন্টলাইন কর্মী হারানোর সামর্থ্য রাখি না। যদি সরকার কারা বিভাগকে এই নতুন বেতন সীমা থেকে ছাড় না দেয়, তবে অনেক কারাগার কার্যত অচল হয়ে পড়বে এবং পুরো কারা ব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।”
অন্যদিকে, প্রিজন গভর্নর্স’ অ্যাসোসিয়েশন (PGA) সতর্ক করেছে, এসব কর্মীর চলে যাওয়া “একটি শূন্যতা তৈরি করবে যা সহজে পূরণ করা সম্ভব নয়।”
এক বিবৃতিতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “কারাগারে কাজ করা একটি অসাধারণ দায়িত্ব। আমরা সর্বদা এমন মানুষ খুঁজছি যারা সমাজকে নিরাপদ রাখতে সাহায্য করতে চায়। আমাদের লক্ষ্য হলো অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও নিয়ন্ত্রিত, নির্বাচিত ও ন্যায্য করা।”
তবে কারা কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে অভিজ্ঞ কর্মীদের হারানোয় কারাগারের স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়বে। তারা সতর্ক করে বলেছেন, “এটি হবে এক দূরদর্শিতাহীন পদক্ষেপ— যা সামনের সারির কর্মীদের দুর্বল করে ফেলবে।”
সূত্রঃ আইটিভি
এম.কে

